প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য, রহস্যময়তা, ভয় ও কৌতূহলের মিশেলে এক অনন্য বিস্ময় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ ও ভারত উপকূল জুড়ে সুন্দরবন। পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে এর গুরুত্ব শুধু পরিবেশগত নয়; ইতিহাস, প্রাণবৈচিত্র্য ও মানবজীবনের সঙ্গে এর গভীর সংযোগ রয়েছে।
সুন্দরবননামা বইটি সুন্দরবনের বিভিন্ন দিককে তুলে ধরার এক অনন্য প্রয়াস। লেখক ইসমে আজ ঋজুর প্রথম দেখা সুন্দরবন থেকে শুরু করে বাঘের ভয়ঙ্কর উপস্থিতি, অরণ্যের গহীনে লুকিয়ে থাকা রহস্য, হারিয়ে যাওয়া জনপদ, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, লবণ শিল্পের অতীত, সুন্দরবনের লৌকিক দেব-দেবী, বনজীবীদের জীবনযাপনসহ আরও বহু বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। প্রতিটি অধ্যায়ে সুন্দরবনের বৈচিত্র্যময় রূপ, এর অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম এবং প্রকৃতি ও মানুষের সম্পর্কের কথা উঠে এসেছে।
বাঘ এই বনের প্রতীক হলেও, তার পাশাপাশি রয়েছে হরিণ, কুমির, সাপ, নানা প্রজাতির পাখি ও অন্যান্য প্রাণী। অন্যদিকে বনজীবীদের জীবনে সুন্দরবনের ভূমিকা, জলদস্যুদের দৌরাত্ম্য, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ধ্বংসযজ্ঞ, বন সংরক্ষণে আধুনিক গবেষণা ও ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতির কার্যকারিতা নিয়েও বইটিতে বিস্তৃত আলোচনা রয়েছে।
তাছাড়া, সুন্দরবনের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এবং প্রাগৈতিহাসিক গুরুত্বের বিবেচনায় লেখক সুন্দরবনের ইতিহাস, হারিয়ে যাওয়া জনপদ ও সভ্যতার চিহ্ন অনুসন্ধান করেছেন, যা পাঠকদের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
যারা সুন্দরবনের রহস্য, জীববৈচিত্র্য, ইতিহাস ও বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে চান, তাদের জন্য এটি এক মূল্যবান সংযোজন।
বইটি সুন্দরবন সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে সাহায্য করবে এবং মানুষকে বন সংরক্ষণ ও প্রকৃতির প্রতি দায়িত্বশীল হতে অনুপ্রাণিত করবে।