বলকান- বুলগেরিয়ার বলকান শৈলশ্রেণির নামানুসারে যে অঞ্চলের নামকরণ, সেটি বিস্তৃত পূবের রুমানিয়া থেকে পশ্চিমের আলবেনিয়া অবধি। দক্ষিণপূর্ব ইউরোপের সুবিশাল এই অঞ্চলটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তরকালে আশ্রয় নেয় সমাজতন্ত্রের ছায়াতলে। তারপর প্রায় অর্ধ শতাব্দী পর গণতন্ত্রের বাঁধভাঙা জোয়ার এসে ভাসিয়ে নেয় সবকিছু। নতুন করে আশায় বুক বাঁধে মানুষ, প্রগতির আকাঙ্খায় বিভোর হয়। কিন্তু অচিরেই চারদিকে বেজে ওঠে যুদ্ধের দামামা, মাথাচাড়া দেয় নানামুখী জাতিগত দ্বন্দ্ব। রক্তক্ষয়ী সংঘাতে ভেঙে আট টুকরো হয় বলকানের বৃহত্তম দেশ যুগোশ্লাভিয়া, গৃহযুদ্ধের আগুনে একসময় দগ্ধ হয় আলবেনিয়া-ও। এই যে শাসনতান্ত্রিক পালাবদল, হঠাৎ করে ভুস করে জেগে ওঠা বিদ্বেষের ডুবোচর- সেটি সম্পর্কে জানবার কৌতূহল-ই বলা চলে লেখককে বলকান অঞ্চলে দু-দুবার ভ্রমণ-রথ ছোটাতে উদ্বুদ্ধ করেছে। তবে সে কারণে কেউ যদি এ-গ্রন্থটিকে কেবল রাজনৈতিক উপাখ্যান ভেবে বসেন তবে হয়তো মস্ত বড় ভুল করবেন। কারণ, তাঁর গল্প কেবল রাজনৈতিক ইতিহাসের চোরাবর্তে ঘুরপাক খায়নি, বরং ইতিহাসকে তিনি পরিমিতরূপে ব্যবহার করেছেন কাহিনির প্রাসঙ্গিক অনুষঙ্গ হিসেবে। লেখক আমাদের নিয়ে ছুটে বেরিয়েছেন- বলকানের রেস্তোরাঁ, পানশালা, সুনীল হ্রদ, গোপন বাঙ্কার, নগরের সৌকর্যপূর্ণ ভাস্কর্য কিংবা হয়তো ঝমঝমিয়ে চলা ট্রামের মাঝে। পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন বলকানের পথে কুড়িয়ে পাওয়া বন্ধুদের সাথে। বইটির পাতায় ডুবে যেতে যেতে বলকানের জনপদ মানসপটে সুস্পষ্টরূপে প্রতিভাত হয়, রুমানিয়ার ড্রাকুলা দুর্গ কিংবা কসোভোর সবজি-বাজারকে দূরের কোন স্থান বলে মনে হয় না তখন।
জন্ম ১৮ই আগস্ট, শেরপুর জেলার জেলা সদরে। বেড়ে ওঠা ঢাকা শহরে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ কৌশলে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পর পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর ক্যানসাস অঙ্গরাজ্যের উইচিটা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে তড়িৎ কৌশলে ও ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। কর্মসূত্রে বাস করেন ক্যালিফোর্নিয়ার সর্ব দক্ষিণের শহর সান ডিয়েগো’তে। লেখালেখির জগতে অনুপ্রবেশ বাংলা ব্লগের মাধ্যমে। ইদানিং নিয়মিত লিখছেন কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে।