ইচ্ছেডানায় উড়ে সবার মতো আমারও শৈশব পার হয়েছে অনাবিল আনন্দের মধ্য দিয়ে। ইচ্ছেগুলো তখন নানান বেশে উঁকি দিয়ে যেত। ছোঁয়া দিয়ে হৃদয় অন্তটিকায় জাগিয়ে তুলতো খুশির পুলক যা ছিল সীমাহীন আনন্দের ভুবনে হারিয়ে যাওয়ার মতো। খুশি রবে কখনো ফুল সৌরভে হারিয়ে যেতাম বর্ণিল ফুলের দেশে। কখনো বা কল্পলোকে পাখির ডানায় চড়ে মেঘমালায় খুঁজে নেওয়া হতো আপন ভুবন। মৃত্তিকার পাতালেও কখনো বর্ণিল প্রজাপতির রঙে, কখনো বা ঘাসফড়িংয়ের ঢঙে জয় করে নেওয়া হতো ভালোলাগার জগৎ। সেকি আনন্দ যার কোনো ভাষা নেই! শুধু অবিশ্রান্ত কলরবে ছুটে চলা। মন-গহীনে গান ধরা। সুপ্ত হৃদয় প্রকৃতির ভালোবাসায় উজার করে দেওয়া। সেসব দিনে ফুলপরি আর লালপরি কল্পলোকে হৃদয় সুপ্ত গৃহটাকে দখল করে নিতো। হৃদয়ে ছোঁয়া লাগা মাত্র নিজেরাই স্বপ্নপুরি কল্পনায় পরিদের মতো হাতের ডানা নেড়ে নেচে-গেয়ে যেতাম গানের তালে। তখন স্বপ্নপুরির মাঠ খুশির আমেজে একাকার হয়ে যেত।
শৈশবের প্রাণচঞ্চল স্মৃতিগুলো একসময় স্মৃতিপটে অম্লীন হয়ে যায়। অতীতে ফিরে যাওয়া না হলেও শৈশব স্মরণে স্মৃতিগুলো অবিরত নাড়া দিতে থাকে। তখনই ইচ্ছা হতো স্মৃতিগুলো সর্বসাকুল্যে কবিতার ভাষায় তুলে ধরি তালে তালে। এতে করে সজ্জিত ছন্দ পদে কবিতা তৈরি মন্দ দেখাবে না। বরং কারও শৈশব-স্মৃতির সাথে মিলে গেলে আনন্দের ভাগাভাগি হবে। কবিতার প্রতি পাঠককূলের ভালোবাসা জন্মাবে। কবি-মন সবসময় পাঠকপূজারী। পাঠক-মন রাঙিয়ে তুলতে সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করে যাই। আর তাই ‘ইচ্ছেডানা’ কাব্যগ্রন্থটি রচিত হয়েছে সবৈব মানব-মানবীর শৈশব স্মৃতিকথার আলোকে। আশা করি, কবিতাগুলো সকলের মন ছুঁয়ে যাবে।