উপন্যাসের প্রধান চরিত্র সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় অধ্যাপক, বাম আদর্শে দীক্ষিত। লেখক হিসেবে ইদানীং বেশ নাম হয়েছে তাঁর। কলেজের পরিবেশ তাঁর অনুকূলে নয়, সেখানে এখন ডানপন্থীদের প্রভাব। কলিগদের মধ্যে একজনই বন্ধু, স্পষ্টভাষী অল্পবয়েসি রত্নাবলী। সুদীপ্ত-অদিতির একমাত্র সন্তান আলেখ্য বিদেশে পিএইচডি-রত। পুত্রের জন্য পাত্রী খুঁজছে দম্পতি। অদিতির সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে আসে অচেনা একটি অল্পবয়েসি মেয়ের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। মেয়ে লহমাকে বেলা বলেছে রিকোয়েস্টটা পাঠাতে। বেলা সুদীপ্তদাকে ভালবাসত। পাড়া বা দু’বাড়ির সকলেই জানত ওদের বিয়ে হবে। ‘ভালবাসি’ কথাটা মুখ ফুটে কখনও বলা হয়নি। সেই অছিলায় সুদীপ্ত বেলাকে এড়িয়ে গিয়ে বিয়ে করে ভাগ্যতাড়িত অদিতিকে। পরোপকারের প্রবণতা সুদীপ্তদার স্বভাবজাত। তা বলে সেটা বেলার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ! সুদীপ্তদার বাড়ির বউ হওয়ার অপূর্ণ সাধ মেটাতে বেলা চায় তার মেয়ের সঙ্গে আলেখ্যর বিয়ে হোক। এই সম্বন্ধে আপত্তি ছিল না সুদীপ্ত-অদিতির। ছুটিতে আলেখ্য এল দেশে। আলাপ হল লহমার সঙ্গে। একে অপরকে পছন্দও করল। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে লহমা রাজি হল না বিয়েতে। আলেখ্য এই পরিণতির জন্য তার বাবাকে দায়ী করল। এদিকে কলেজ ইউনিয়ন রত্নাবলীকে জড়িয়ে সুদীপ্তর বিরুদ্ধে একটা স্ক্যান্ডাল তৈরি করে। চিরকাল ভাল মানুষ হতে চাওয়া সুদীপ্ত হয়ে পড়ল পরিবার ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন। এখন তা হলে কোথায় যাবে, কী করবে সুদীপ্ত?
সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম ২১ জানুয়ারি ১৯৬১, হুগলি জেলার উত্তরপাড়ায়। অদ্যাবধি উত্তরপাড়ার পৈতৃক বাড়িতে বসবাস। পিতা সাহিত্যসেবী। লেখা শুরু আঠারো-উনিশ বছর বয়সে। সে সময় দু-তিনটি গল্প স্থানীয় লিটল ম্যাগাজিনে ছাপা হয়েছিল। তারপর দীর্ঘ বিরতি। বারো বছর পর (১৯৯৪) আবার একটি গল্প লিখে সরাসরি দেশ পত্রিকায় পাঠিয়ে দেন। একসারি নবীন গল্পকারদের সঙ্গে গল্পটি ছাপা হয়। পরিচয় হয় বিরাট পাঠককুলের সঙ্গে। বিগত চার বছর ধরে নামী-অনামী বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লিখে যাচ্ছেন। প্রথাগত শিক্ষা স্নাতক পর্যন্ত। এ ছাড়া ফটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা। অল্পবয়স থেকে বিভিন্ন পেশায় যুক্ত থেকেছেন। এখন একটি ফটোপ্রিন্টিং সংস্থায় কর্মরত। প্রথম উপন্যাস ‘প্রত্নকন্যা'। মল্লারপুর’ ১৯৯৯ সালের স্নোসেম-আনন্দ দুর্গোৎসব অর্ঘ্য-এ শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হিসেবে পুরস্কৃত হয়। এ ছাড়াও ১৯৯৭ সালে পেয়েছেন গল্পমেলা পুরস্কার।