1 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
TK. 130TK. 115 You Save TK. 15 (12%)
আজই শেষদিন! শেষ হচ্ছে বই ও পণ্যে ৭০% পর্যন্ত ছাড়! বছরের সেরা ডিল, রকমারি ক্লিয়ারেন্স সেল, ২০২৫
Related Products
Product Specification & Summary
কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬) কবি হিসেবে যেমন মহান; প্রাবন্ধিক- দেশপ্রেমিক হিসেবেও তাঁর অবস্থান মহীয়ান। তাঁর 'যুগবাণী' প্রবন্ধগ্রন্থ ১৯২২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। স্মর্তব্য যে, বইটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই ব্রিটিশ-রাজ কর্তৃক বইটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। বইটির প্রবন্ধগুলোর অধিকাংশ ১৯২০ সালের মে মাস থেকে ১৯২১ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সান্ধ্য দৈনিক নবযুগ এর সম্পাদকীয় প্রবন্ধ হিসেবে লিখিত হয়েছিলো। যুগের বাণী বহনকারী এই গ্রন্থ ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনে ভারতীয় স্বাধীনতা অর্জনে ও জনগণের আর্থনীতিক মুক্তির প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
কাজী নজরুল ইসলামের 'যুগবাণী' (১৯২২) প্রবন্ধগ্রন্থটি আসলেই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের সময়পর্বে ১৯২০ এবং ১৯২১ সালের সেই উত্তাল যুগে বাঙালি ও ভারতীয়দের মুক্তির পক্ষে, আর্থনীতিক স্বচ্ছলতা আনয়নের উৎকাঙ্ক্ষায় প্রবলভাবে ভাস্বর। নজরুলকে আমি শুধু তৃতীয় বিশ্বের ভারতবর্ষের প্রতিনিধিই মনে করি না; বরং সারাবিশ্বের নির্যাতিত মানুষের তিনি প্রতিনিধি ছিলেন। নজরুলের মতো এমন দেশপ্রেমিক লেখক নজরুলের সময়েও খুব বিরল ছিলো; এখন তো প্রায় নেই বললেই চলে।
'নবযুগ' প্রবন্ধের মধ্যে কবি শৃঙ্খলিত নিপীড়িত বন্দিদের কথা বলে তাদের শৃঙ্খল- মুক্ত হবার কথা উল্লেখ করেছেন। নির্যাতিত ভারতবাসী যাতে স্বাধীনতা ও স্বচ্ছলতার জন্যে জাগ্রত হয় সে কথাই কবি বলতে চেয়েছেন। অত্যাচারে ও আঘাতে আঘাতে অতিষ্ঠ-ভারতবাসীদের কৃষ্ণপর্দা ওঠে গিয়ে আজ তারা জাগরণের দ্বারে উপনীত। রাশিয়া, আয়ারল্যান্ড, তুর্কি যেমন নবযুগকে সম্ভাবিত করছে, ভারতবর্ষ তথা হিন্দুস্থানও এজন্য জাগ্রত হবার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ১৯১৭ সালে রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের মাধ্যমে তা জাগ্রত হয়েছে। ভারতীয়দের পৃষ্ঠে নিস্করুণ বেত্রাঘাত পড়েছে এবং দুর্বিনীত পদাঘাতের দুর্বিসহ বেদনার ঘা সৃষ্টি হয়েছে। গুলি, বল্লম ও তলোয়ারের নির্যাতনে ভারতবাসীর বুক ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছে। এজন্যই ভারতবর্ষ নবযুগকে আহ্বান জানাতে চায়, স্বাধীনতা চায় এবং অত্যাচার থেকে মুক্তি চায়। রাশিয়া যেমন বলেছে অত্যাচারীকে মেরে, দাসত্বের নিগড় ভেঙে স্বাধীনতা-বিরোধীদের শির উড়িয়ে দাও; 'আল্লাহু আকবার' ধ্বনিতে তুর্কিরা যেমন স্বাধীনতা-অপহারীর অন্তরে মহাভীতি সঞ্চার করেছে; আইরিশরা যেমন দানবশক্তিকে ভুলুষ্ঠিত করে মানব ও দেবতাকে বাঁচানোর জন্যে উদগ্র হয়েছে- ভারতবাসীও তেমনি জেগে ওঠেছে।
রাশিয়া, তুর্কি ও আয়ার্ল্যান্ডবাসীদের এই জেগে ওঠা হলো আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারী-সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হওয়া। একই ব্যথায় সকলে ব্যথিত। 'নিপীড়িত সত্য মানবাত্মা'কে বাঁচিয়ে দেশবাসীর স্বস্তি, শাস্তি নিশ্চিত করার জন্যেই দেশপ্রেমিক সন্তানদের প্রচেষ্টা।