১৮৮৭ থেকে ১৯২৭ সালের মধ্যে স্যার আর্থার কোনান ডয়েল শার্লক হোমস চরিত্র নিয়ে ৬২ টি বই লিখেছেন, এর মধ্যে ৪ টি ছিল উপন্যাস, ৫৮ টি ছোটগল্প। প্রথম সংস্করণটি এখনও লন্ডনের জাদুঘরে রাখা আছে। গল্পগুলোতে শার্লক হোমসকে দেখা যায় একজন চাঁছাছোলা কথা বলা, নিজের বুদ্ধির উপর প্রচণ্ড অহংকার দেখানো, প্রায় অসামাজিক, কিন্তু তীক্ষè বুদ্ধির মায়াবী একজন মানুষ হিসেবে, যে একই সাথে বক্সার, ভায়োলিনিস্ট এবং সায়েন্টিস্ট, কিন্তু নিজেকে পরিচয় দেয় সে একজন ‘কনসাল্টিং ডিটেক্টিভ’ হিসেবে। অনেক ক্ষেত্রে তাকে সোসিওপ্যাথও বলা চলে, যে কিনা সব বুঝে, শুধু সামাজিকতাটাই বুঝে না।
শার্লক হোমসের কাজ হলো রহস্য উদঘাটন করা, যার অধিকাংশই হয় অপরাধমূলক। তার তদন্ত পদ্ধতির অনেকটা জুড়েই থাকে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ, সাথে মানসিক এবং সামাজিক বিশ্লেষণ। অধিকাংশ গল্পেই অপরাধীকে এমন ভাবে কোণঠাসা করা হয় যে হয় সে বুঝতেই পারে না যে তাকে সন্দেহ করা হচ্ছে এবং তার বিরুদ্ধে অকাট্য প্রমাণ যোগাড় করা হয়ে গেছে, অথবা তার পালানোর পথ বন্ধ করে দিয়ে এমনভাবে প্রমাণ করা হয় পুরো ঘটনা, শেষ পর্যন্ত সে বাধ্য হয় সব নিজেই স্বীকার করতে।
শার্লক হোমস চরিত্র শুধু সাহিত্যের ইতিহাসেই নয়, অপরাধ বিজ্ঞানের ইতিহাসেও এতই শক্তিশালী যে, তার আবিষ্কৃত নানা মেথড সত্যিকার অর্থেই লন্ডন পুলিশ কাজে লাগাতে শুরু করে। হাত-পায়ের ছাপ শনাক্ত করার জন্য প্লাস্টার অফ প্যারিস, ক্রাইম সিন হলুদ টেপ দিয়ে ঘিরে দেয়া, এমনকি অপরাধী শনাক্তে কুকুরের ব্যবহার পর্যন্ত এই চরিত্রের, অর্থাৎ স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের অবদান। অপরাধ বিজ্ঞান এবং থ্রিলারের জগতে আপনাকে স্বাগতম, আপনি যে বইটি হাতে তুলে নিয়েছেন, সেই বই বহু থ্রিলারের জনক।