3 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
TK. 200TK. 179 You Save TK. 21 (11%)
Related Products
Product Specification & Summary
চট্টগ্রামের ইতিহাসের স্বাতন্ত্র্য এবং বৈশিষ্ট্য বরাবরই ঐতিহাসিক এবং গবেষকদের আকৃষ্ট করে। পূর্বভারতের উপজাতি অধ্যূষিত অঞ্চল, ব্রহ্মদেশ চট্টগ্রামের তিন দিক বেষ্টন করে রেখেছে। এই তিন দিক থেকেই জনগোষ্ঠি সমতল চট্টগ্রামে জনবসতি গড়ে তুলেছে। লেখক জামাল উদ্দিন এ-সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। জেলার পশ্চিম দিকের বিস্তীর্ণ তটরেখা প্রাচীন যুগ থেকেই মধ্যপ্রাচ্য, দূরপ্রাচ্য এবং পাশ্চাত্য দেশসমূহের সাথে চট্টগ্রামের যোগাযোগ স্থাপন করেছে।এর ফলে চট্টগ্রাম যেমন বিভিন্ন জাতি ও উপজাতীয়দের মিলনস্থানে পরিণত হয়েছে, তেমনি চট্টগ্রামের ইতিহাসও বৈচিত্র্য লাভ করেছে। লেখক জনাব জামাল উদ্দিন ‘চট্টগ্রামের ইতিহাস প্রসঙ্গ : জনবসতি, নামকরণের যৌক্তিকতা, কালনির্ণয় ও পণ্ডিতবিহার বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক গ্রন্থে চট্টগ্রামের ইতিহাসের নানা দিক নিয়ে অনেক আলোচনা করেছেন। তিনি নিজে পরিশ্রম করে মাঠপর্যায়ে এ-সমস্ত তথ্য-উপাদান সংগ্রহ করেছেন। এর ফলে তাঁর আলোচনা একটা বিশেষ মূল্য লাভ করেছে। চট্টগ্রামের ইতিহাসের একটা বৈশিষ্ট্য হলো অতীত যুগে বাংলা, ত্রিপুরা এবং আরাকান এই তিন রাজ্যের প্রতিদ্ব›িদ্বতার ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল চট্টগ্রাম। এর ফলে চট্টগ্রামে স্বাধীন সত্বার প্রকাশ ঘটবার সুযোগ ঘটেনি। কেবলমাত্র একটি ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়। আর তা হলো চট্টগ্রাম হরিকেল রাজ্যের বৃহদংশ গঠন করেছিল এবং হরিকেল রাজ্যের রাজধানী বর্দ্ধমানপুর চট্টগ্রামের দেয়াঙ (দেবগ্রাম) সন্নিহিত স্থানে অবস্থিত ছিল। তাম্রলিপি, প্রাচীন চৈনিক পরিব্রাজকের বিবরণ, স্থাপত্যকীর্তির ধ্বংসাবশেষ ইত্যাদি সূত্রসমূহ চট্টগ্রামেই হরিকেলরাজ্যের অবস্থান প্রমাণ করে। হরিকেলরাজ্যের রাজধানী বর্দ্ধমানপুর দেয়াং পার্বত্য অঞ্চলেই যে অবস্থিত ছিল তা একরূপ নিঃসন্দেহে বলা যায়। ঐতিহাসিক হান্টারের গ্রন্থে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে ‘বর্দ্ধবান’ নামক স্থানের উল্লেখ থাকায় মনে করা যেতে পারে যে ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত বর্দ্ধমান (পুর) এর অস্তিত্ব ছিল। লোকমুখে বর্দ্ধমান বা বর্দ্ধবান বড়উঢানে পরিণত হয়েছে। আবার বড়উঢানকে শুদ্ধ বাংলায় রূপ দেওয়া হয়েছে বড়উঠান রূপে। লেখক এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তিব্বতীয় সূত্রে উল্লিখিত প্রাচীন যুগের পণ্ডিতবিহার বিশ্ববিদ্যালয় যে চট্টগ্রামে অবস্থিত ছিল এ বিষয়ে দ্বিমত নাই। কিন্তু চট্টগ্রামের কোন অঞ্চলে অবস্থিত ছিল তা নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে তর্ক-বিতর্কের শেষ নাই। প্রাচীন বৌদ্ধযুগে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ বিহার বা বৌদ্ধ উপাসনালয়কেন্দ্রিক ছিল। যেমন তক্ষশীলা, নালন্দা, উদ্ভাণ্ডপুর, পাহাড়পুর ইত্যাদি। বডউঠান নামক গ্রামের সন্নিহিত ঝিওরি গ্রামে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ মূর্তি রক্ষণাগার আবিষ্কৃৃত হয়েছে।এই মূর্তিগুলি যে কোন বৌদ্ধবিহারের সম্পদ ছিল তাতে সন্দেহ নাই। এই প্রাচীন বৌদ্ধবিহারই যে পণ্ডিতবিহার নামে পরিচিত ছিল তা একরূপ জোর দিয়েই বলা যায়।