"এনাম, নিনেভ, বেবিলন-এইসব নাম যেমন ধূসর তেমনি উজ্জল; এই সভ্যতাগুলোর প্রাক্তন অস্তিত্ব এবং আমূল অবলুপ্তি আমাদের জীবনের প্রেক্ষিতে সমান, অর্থহীন। কিন্তু ফ্রান্স, ইংল্যাণ্ড, রাশ্যা...এই নামগুলো অপরূপ। এমনকি লুসিতানিয়া নামটিও মনোরম। এবং আজ আমরা দেখছি যে, ইতিহাসের খাদ এতই গভীর যে, তা গোটা বিশ্বকে গ্রাস করতে পারে। আমরা উপলব্ধি করতে পারছি যে, মানুষের মতন সভ্যতাগুলোও স্বল্পায়ু, মরণশীল। যে পরিস্থিতিতে কীটস এবং বোদল্যেয়রের রচনা মেনান্দারের রচনাবলির মতোই একই নিয়তি মেনে নেবে, সে পরিস্থিতি আর আমাদের কল্পনার আওতাতীত নয়।"
এই বিষণ্ণ শব্দগুলো উচ্চারণ করেছিলেন পল ভ্যালেরী, প্রথম মহাযুদ্ধের পর। কিন্তু ভিয়েতনাম, চেকোশ্লোভাকিয়া, যে অফ পিগস, চিলি, আলজেরিয়া ও তিব্বতের, এমনকি বাংলাদেশের পর পল ভ্যালেরীর মতো মহৎ কবি কোন বিশ্ববিক্ষাকে আঁকড়ে ধরতেন? তাঁর সংবেদনক্ষমতা ও বুদ্ধিমত্তা নিয়ে নিশ্চয়ই তিনি নৈঃশব্দ্যকে বেছে নিতেন না। তাহলে তাঁর লেখায় কোন সুরটি ধরা দিতো? নৈর্ব্যাক্তিক, ধ্রুপদী শিল্পাদর্শ কি তিনি বর্জন করতেন না? দ্বিতীয় যুদ্ধান্তিক বিশ্ব তাঁর কাছে ঢের বেশি অসহনীয় মনে হতো, বিশুদ্ধ মুক্তির চর্চা অধিকতর অর্থহীন।