এ উপন্যাসের ঘটনা গড়ে উঠেছে 'কুয়াপুর' নামক একটি গ্রামকে কেন্দ্র করে। একদিকে আছে বেণী ঘোষালের মতো সামন্ততান্ত্রিক জমিদার অন্যদিকে রমেশের মতো প্রজাবৎসল্য ন্যায়পরায়ণ জমিদার। আর এই দুই শ্রেণির মধ্যে থেকে পৃষ্ট হতে হয়েছে রমাকে। একদিকে আছে ব্রাহ্মণ্য শ্রেণির শোষণ, অন্যদিকে মুসলিমদের নিজস্ব ধ্যান-ধারণা নিয়ে বেঁচে থাকা। আসলে শরৎচন্দ্র সে শোষণের ইতিবৃত্ত জানতেন। ফলে মুসলিমদের প্রতি হিন্দু ব্রাহ্মণ জমিদারদের অত্যাচারের বলিষ্ট ছবি আঁকতে তিনি পিছপা হননি। রমেশের পিতৃশ্রাদ্ধকে কেন্দ্র করে ধর্মদাস, গোবিন্দ গাঙ্গুলীদের আচরণ, তেমনি সামান্য মাছ নিয়ে বিবাদ, রমেশকে বিনা দোষে জেলে পাঠানো, সামান্য চালতা গাছ নিয়ে দুই পরিবারের বিবাদের মধ্য দিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া সবই পল্লিজীবনের এক নিষ্ঠুর বাস্তব চিত্র।