ছেলেটা কাঁদছিল। দুধবাজারের মধ্য দিয়ে ছেলেটা কাঁদতে কাঁদতে হাঁটে।
দু'হাতের উল্টো পিঠে চোখ কচলানোর ফাঁকে ফাঁকে দু'পাশের ভাঁড়ভর্তি দুধের
মধ্যে হাবুডুবু খাওয়া কলাপাতা আর কচুরিপানার টুকরোগুলো ঝকঝক করে ওর
চোখে এসে আটকে থাকে। ভীষণরকম অস্বস্তিকর-একটা ঘ্যাঙানি সুরে কাঁদতে
কাঁদতে ছেলেটা উদ্দেশ্যহীনভাবে এগোয়। ছ'সাত বছরের অপুষ্ট ছেলেটির
কালশিটে কাঁকালে ময়লা চিটেধরা কালো তাগায় একটা ছাঁৎলাপড়া রূপোর
আনারস ও দু' গোটা ঘুঙুরের ভেতরকার দানাগুলো লক্ষ্যহীন পা ফেলার তালে
ছুনতুন বাজে। দুধবাজারের ক্রেতাদের এলোপাথাড়ি ধাক্কা আর বিক্রেতাদের
দূরদূরানি খেতে খেতে ছেলেটির কান্নার গতি আরও বাড়ে। কান্নার সুরটাকে
তার কাছে অন্তরঙ্গ সঙ্গীর মতো মনে হতে থাকে। অসহায়, অজ্ঞাত হাঁটাপথে সে
দম সঞ্চয় করে করে কান্নার দমক ধরে রাখে।