নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সন্তানের সাত বছর বয়স থেকে পিতা-মাতাকে তার নামাজ শিক্ষার প্রতি মনোযোগী হতে বলেছেন। পিতা-মাতা আদর-সোহাগ, উৎসাহ-উপদেশ দিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে সাত বছর থেকে নামাজি করে তুলতে। প্রয়োজনে উপহার দিবে। পুরস্কৃত করবে।
দশ বছর হওয়ার আগ পর্যন্ত তার হাতে সময় হলো চার বছর। মাস হিসাবে আট চল্লিশ মাস। দিন হিসাবে প্রায় ১৪০০ দিন। দীর্ঘ চার বছর ক্রমাগত উপদেশ, উৎসাহ, ভালোবাসা দিয়েও যদি সন্তান নামাজের প্রতি সাড়া না দেয়, তা হলে দশ বছর পূর্ণ হওয়ার পর এবার পিতা-মাতা আরেকটি পদ্ধতি অবলম্বন করবে। সেটা হলো শাসনের পদ্ধতি। এবার তাকে ভয় দেখাবে জাহান্নামের, শাসনের। ভয় না পেলে এবং নামাজ না পড়লে এবার মারার সুযোগ আছে। যাতে চিরস্থায়ী জাহান্নামের আজাব থেকে সন্তান বেঁচে যেতে পারে। তবে এ মারাটা শাস্তি দানের জন্য হবে না।
শাস্তির জন্য মারা হারাম। এতে মানুষের মানহানী করা হয়। (তবে হক নষ্টের অপরাধে কাজির শাস্তি এখানে ধর্তব্য না।) সংশোধনের জন্য, শিক্ষার জন্য মারবে। প্রহার অবশ্যই মৃদু হতে হবে। শরীরে দাগ হয় এভাবে মারবে না। আব্বাস রা. বলেন, মিসওয়াক বা এজাতীয় জিনিস দিয়ে মারবে। প্রহার প্রসঙ্গ তখনই আসবে যখন কারো ক্রমাগত উপদেশ ও ভালোবাসায় কাজ হয় না। কারো যদি এতেই কাজ হয়ে যায়, তা হলে মারার কোনো প্রশ্নই আসে না।
মারটা হলো রোগীর অষুধের মতো। যেহেতু সকলের মানসিকতা এক নয়। কাউকে সহজ করে বললেই মেনে নেয়। আবার কাউকে সহজ করে বললেও কাজে দেয় না। তখন তাকে শাসন করতে হয়।
তিনি ১৩৭২ হিজরি সনে সৌদি আরবের কাহতানের আরিন নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন৷ মৃত্যুকালে হিজরি সন অনুযায়ী তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। এ প্রখ্যাত আলেম জনপ্রিয় জিকিরের কিতাব ‘হিসনুল মুসলিম’সহ ৮০টি কিতাব রচনা করেন। আজ বাদ আসর স্থানীয় রাজেহি জামে মসজিদে জানাজা শেষে তার লাশ মাকবারায়ে নাসিমে দাফন করা হবে। ড. সাঈদ বিন আলি বিন ওয়াহাফ আল-কাহতানি ১৪০৪ হিজরিতে জামেয়া ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সউদ থেকে ‘কুল্লিয়াতু উসুলিদ দ্বীন’ বিষয়ের মাধ্যমে শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করেন। অতঃপর ১৪১২ হিজরিতে তিনি ‘আল হিকমাহ ফিদদাওয়াতি ইলাল্লাহ’ বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন এবং ১৪১৯ হিজরিতে ‘ফিকহুদ দাওয়াহ ফি সহিহিল ইমামিল বুখারি’ বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন৷ তিনি কাহতানের স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও দায়ী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ড. সাঈদ বিন আলি বিন ওয়াহাফ আল-কাহতানি লিখিত ‘হিসনুল মুসলিম’ কিতাবটি কয়েক মিলিয়ন কপি ছাপা হয়েছে, যা পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ ও প্রচার হয়েছে। যা মুসলিম উম্মাহর জন্য এক বিশেষ নেয়ামত। আল্লাহ তাআলা বিশ্বনন্দিত আলেমেদ্বীন শায়খ ড. সাঈদ বিন আলি বিন ওয়াহাফ আল-কাহতানিকে জান্নাতে মেহমান হিসেবে কবুল করুন। আমিন।