মহিমান্বিত মৃত্যু এক! দুই! তিন! ঠিক এই তিনটি লহমার পর, মাত্র তিন সেকেন্ড বাদে আপনার মুখোমুখি এসে যদি মৃত্যু দাঁড়ায়—কী করবেন? আপনার আর কিছুই করার নেই! কোনো অপশন নেই! কোথাও যেতে পারবেন না! কাউকে শেষ কথাটি বলার সুযোগ নেই! একটিই মাত্র পথ খোলা—মৃত্যু! আপনি কী করবেন? পাঁচ সেকেন্ড ভাবুন তো! হ্যাঁ! আপনি একটি ভালো মৃত্যু কামনা করবেন। সবাই তা-ই চায়। যখন মানুষের শেষ সময়, আজরাইল এসেছে জান কবজে, যখন জীবন ও জগতে আর কিছুই চাওয়ার থাকে না—তখন মানুষ কেবল একটি জিনিসই চায়—ভালো মৃত্যু! ভালো মৃত্যু কী, আপনি জানেন? মৃত্যু কেন মহিমা পায়, কেন মহিমান্বিত হয় মৃত্যুও—সেই রহস্য কি আপনার জানা আছে? খুব আড়ম্বরে যে শবযাত্রা হল, তা কি হতে পারে কদাকার মৃত্যুর নমুনা? আবার খুব নিতান্ত সাদামাটা মৃত্যু কি হতে পারে মহিমান্বিত মৃত্যু? এক অধ্যাপকের বয়ানে সক্রেটিসের মৃত্যুর ঘটনা দিয়ে বইয়ের শুরু। অধ্যাপক সেই মৃত্যুকে বলেছেন ‘মহিমান্বিত’। কিন্তু মহিমান্বিত বললেই কি মহিমান্বিত? তাও মৃত্যুর সাথে যার সম্পর্ক? যেই জগতের সাথে জড়িয়ে আছে অনেক হিসাবনিকাশ আর দান-প্রতিদানের মীমাংসা? লেখক ওমর আলী আশরাফ তার অপূর্ব সুন্দর গদ্যে বলেছেন হিমশীতল মৃত্যুর কথা। মহিমান্বিত মৃত্যুর কথা। কদাকার মৃত্যু ও দেখালোপনায় বিভ্রান্ত সাড়ম্বর মৃত্যুর কথা। কুরআন-হাদিস-আসার ও জীবনের অফুরন্ত বেলাভূম তার লেখার আশ্রয়; এখান থেকে খোরাক নিয়েই তিনি লিখেছেন এই বই—’মহিমান্বিত মৃত্যু’। তার এ বই পড়লে গা শীতল হয়ে আসে—কদাকার মৃত্যুর ভয়ে। মন ঝিম মেরে থাকে—মৃত্যু কেমন হবে, এই অমীমাংসায়। হৃদয় লোভী আর ঝলমল করে ওঠে কেবলই একটি মহিমান্বিত মৃত্যুর জন্য!
আমি ওমর আলী আশরাফ। জন্ম ১৯৯২ সালের ২ জুন। বেড়ে ওঠা গ্রামের বাড়ি ওয়াসেকপুরে। এটি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলায় অবস্থিত। ৫ ভাই ২ বোনের মধ্যে আমি ষষ্ঠ। আমি হিফজ সম্পন্ন করি আমাদের গ্রামের প্রসিদ্ধ মাদরাসা জামেয়া ইসলামিয়া আজিজিয়া ওয়াসেকপুরে। তারপর একজন যোগ্যতর আলেম হওয়ার লক্ষ্যে বাড়ি ছেড়ে এসে ভর্তি হই ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থিত দারুল উলুম মাদানীনগর মাদরাসায়। আমার যা কিছু অর্জন এবং মানস গঠন, তার প্রায় পুরোটারই কৃতিত্ব এখানকার প্রিয় উস্তাযগণের। শিক্ষাজীবনের শেষ তিন বছর কাটাই পুরান ঢাকার জামেয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ মাদরাসায়। এখান থেকে সম্পন্ন করি তাকমিল ফিল-হাদিস। বর্তমানে অধ্যয়ন ও লেখালেখি আমার প্রধান ব্যস্ততা। ভ্রমণ আর সংগীত বিশেষ পছন্দ। পাশাপাশি রয়েছে ‘বিন্যাস’ নামক বইপুস্তক সম্পাদনা, অনুবাদ ও প্রস্তুতকরণের একটি বহুমাত্রিক প্রতিষ্ঠান।