বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় সোনারপুর-হরিণাভি স্কুলে শিক্ষকতা করার সময়ে 'উপেক্ষিতা' নামক গল্প লেখেন ১৯২২ সালে; মাসিক প্রবাসীর ১৩২৮ সনের মাঘ সংখ্যায় তা ছাপা হয়—এটিই তাঁর প্রথম রচনা।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ১৮৯৪ সালে ১২ সেপ্টেম্বর তৎকালীন যশোর জেলায় (আদি নদীয়া), ইছামতি নদীর তীরে বারাকপুর নামক এক বর্ধিষ্ণু গ্রামে; আর মৃত্যু ১৯৫০ সালে ১ নভেম্বর ঘাটশিলার বাড়িতে]-এর পূর্বপুরুষের বসতি ছিল চব্বিশ পরগনার বসিরহাটের পানিতর গ্রামে। তাঁর পিতামহ কবিরাজ তারিণীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বারাকপুরে বসতি গড়েছিলেন। বিভূতির পিতা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় আর মাতা মৃণালিনী দেবী। অভিভাবকদের ঔদাসীন্য আর অংশত আর্থিক অনটনের কারণে তাঁর বিদ্যানুশীলন ছিল শিথিল; অনেক পাঠশালা-বিদ্যালয় পরিবর্তন করতে হয়েছিল। তবে লেখাপড়ায় বরাবরই তীক্ষ্ণ মেধার স্বাক্ষর রাখতে সমর্থ হয়েছিলেন তিনি। অবশ্য তাঁর শৈশব-কৈশোরের সাফল্য অর্জন সেখানে নয়; স্বভাব-বাউণ্ডুলে, সংসার-উদাসীন, রোম্যান্টিক বাবার সাথে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে বৃক্ষতরুলতা ও প্রকৃতিরহস্যের সন্নিধানে এসে অসাধারণ বোধসম্পন্ন এক মানুষে তিনি ক্রমশ রূপান্তরিত হচ্ছিলেন। তাঁর অলোকসম্ভব চিদ্বৃত্তি ও অনুভবশক্তির পেছনে পিতৃসান্নিধ্যের অবদান অপরিমেয়।