সহীহ সুন্নাহ (হাদীস) দ্বারা শুদ্ধ আমল ও ইবাদত করতে বাংলার মুসলিম সমাজকে অনুপ্রাণিত করার উদ্দেশ্যে এটি একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। যেহেতু সন্দিগ্ধ ও দঈফ হাদীসকে ভিত্তি করে কোন আমল করার চেয়ে সহীহ হাদীসকেই ভিত্তি করে নিঃসন্দেহে নিশ্চিতরূপে আমল করাটাই উত্তম। কারণ দয়ীফ হাদীস দ্বারা আমল ‘বিদআত’ বলে পরিগণিত। বাংলা ভাষায় লিখিত অধিকাংশ দুআ’ ও যিকরের বই-পুস্তকগুলিতে অনেক দয়ীফ হাদীস থেকে দুআ’ ও যিকর সংকলিত হয়েছে। যার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রেখে -আমার জানা মতে -বিশুদ্ধ হাদীস থেকে বিশুদ্ধ দুআ’গুলি এ পুস্তিকায় সংকলন করেছি। এ প্রয়াস আল-মাজমাআর সমবায় ইসলামী দাওয়াত, অফিসের কর্তৃপক্ষের নিকট ব্যক্ত হলে তাঁরা বইটি প্রকাশ করার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর জন্য আমি নিজের এবং তাঁদের জন্য আল্লাহর নিকট উত্তম প্রতিদানের আশা রাখি। অর্থ: হৃদয়ঙ্গম-সহ নামায, দুআ’ ও যিকর আদি করাই উত্তম ও আবশ্যিক ভেবে এ পুস্তিকায় প্রত্যেক দুআ’র শেষে তার অর্থ সংযোজিত হয়েছে। আরবী জানেন না এমন বাঙালী-পাঠকের জন্য দুআর বাংলা উচ্চারণও তার সাথে যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু আরবী ভিন্ন কোন অন্য ভাষায় কুরআন কারীমের আয়াত লিখা ওলামাদের ফতোয়া মতে অবৈধ বলে কোন কুরআনী দুআর উচ্চারণ দেওয়া সম্ভব হয়নি। আশা করি আল্লাহ ও তাঁর যিকর- ভক্ত মুসলিম পাঠক কোন কারী আলেমের নিকট মৌখিক মুখস্ত করে নেবেন। অথবা নিজে আরবী শিখে সৃষ্টিকর্তা সুমহান প্রভুর বাণী নিজে পড়ার সৌভাগ্য লাভ করবেন। কারণ ভক্তি-ভাজনের বচনামৃতে পরিতৃপ্ত না হতে পারলে ভক্তের ভক্তি অপূর্ণই থেকে যায়।
.শায়খ আব্দুল হামিদ ফাইযী আল-মাদানী একজন প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ, লেখক ও অনুবাদক, যিনি বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের মধ্যে ইসলামী জ্ঞানের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ১৯৬৫ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আলেফ নগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিকভাবে মক্তব ও স্থানীয় স্কুলে শিক্ষা গ্রহণের পর তিনি জামেয়া রিয়াযুল উলুম ও জামেয়া ফাইযে আম থেকে ইসলামি শিক্ষা লাভ করেন। এরপর সৌদি সরকারের স্কলারশিপে তিনি মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং সেখান থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি সৌদি আরবের আল-মাজমাআহ ইসলামি সেন্টারে দাওয়াত ও তাবলিগ কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছেন। তাঁর লেখা ও অনুবাদে রচিত প্রায় ৬০টির বেশি বই রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে "আদর্শ বিবাহ ও দাম্পত্য জীবন", "জ্বীন ও শয়তান", "মহিলাদের নামাজ", "জানাযা দর্পণ", "রোজা ও রমজান", "ফাযায়েল ও রাযায়েল" অন্যতম। সহজ ভাষা, বিশুদ্ধ আক্বীদা ও প্রামাণ্য দলিল-ভিত্তিক উপস্থাপন তাঁর লেখার বিশেষ বৈশিষ্ট্য, যা তাকে বাংলা ভাষার অন্যতম জনপ্রিয় ইসলামি লেখকে পরিণত করেছে।