Category:রোমান্টিক কবিতা
আজই শেষদিন! শেষ হচ্ছে বই ও পণ্যে ৭০% পর্যন্ত ছাড়! বছরের সেরা ডিল, রকমারি ক্লিয়ারেন্স সেল, ২০২৫
তবে বলি, কেন গালিবের কবিতা ভালো লাগে। প্রথমত তার কবিতা শ্রম্নতিমধুর, পাঠমধুর। পড়তে পড়তে বেশ কিছু ছবি, বেশ কিছু দোলা এসে লাগে, মনে অথবা মগজে। গালিব অতি চতুর কবি, ঠিক আমাদের মহল্লার শিল্পী নামের মেয়েটির মতো, নিপুণ চতুরতায় যে সবার মনেই দোলা দিয়ে যায়। এমন তো নয় যে সে বিরাট সুন্দরী, কিন্তু সৌন্দর্যের চেয়েও বড় গুণ অথবা ছলনা হলো, সে সবাইকে একটা আপন করে নেয়ার ছল দেখায়। এইটুকু ছল গালিবের কবিতাতেও প্রবল। সে সুতীক্ষ্ণভাবে ছন্দের দোলাচল, শব্দের কারুকৌশল আর দৃশ্যকল্পের মোহমায়া সৃষ্টি করে। সেইসব মায়ায় আমার মতো নাদান পাঠক আটকা পড়ে যায়। গালিবের কবিতা মোহনীয়, মধুর এবং চতুর। সচরাচর এই শব্দটির উচ্চারণে শেয়াল নামের যে প্রাণীটি চোখে ভাসে তাকে এখানে টেনে আনলে চলবে না, এখানে বোধহয় চতুর বলতে আমি চৌকস শব্দটাই বলতে পারতাম কিংবা ইংরেজিতে যাকে বলে স্মার্ট। কিন্তু কেন চতুর বললাম? কারণ আমিও একটু ছল করলাম, অন্য ইশারা দিলাম, ভিন্ন তর্কের সুযোগ করে দিলাম। বিশ্বাস করি, এই অন্য ইশারা, ভিন্ন মাত্রা দেয়াও কবি সোহেল হাসান গালিবের একটি নিজস্ব ব্র্যান্ড কৌশল। গালিব এমনই কৌশলী যে প্রায়শই বিপদজনক। এই যে সামান্য একটা মার্বেলের স্মৃতি আমাদের শৈশব—কৈশোরে মিশে আছে সেই নিরীহ মার্বেল গড়াতে গড়াতে চলে যায় কোনো এক নির্জন নাভিতে। বলার অপেক্ষা রাখে না, জীবনানন্দের ‘নগ্ন নির্জন হাত’—এর চেয়ে ‘নির্জন নাভি’ অনেক বেশি গভীর আর কামোদ্দীপক। গালিবের কবিতার কামটুকুও আমার ভালো লাগে-
ছোট্ট একটা মার্বেল হলেই সবচেয়ে ভালো হতো, ভালো হতো তোমার সম্মতিটুকু পেলে-
গড়িয়ে গড়িয়ে এসে নামতাম ওই নির্জন নাভিতে।
— মার্বেল
আপাত নিরীহ বস্তুকে ভয়ঙ্কর করতে পারার কৌশল শুধু হন্তারকই জানে তা নয়, কবিও জানে। গালিব সেই জাতের কবি যে বিনা রক্তপাতে খুন করে ফেলতে পারে অথবা খুন হয়ে যেতে পারে-
খুনও তো সম্ভব রক্তপাত বিনা। সূর্যাস্তের আগে অনেক অনেক দিন পর আজ বৃষ্টিতে দুচোখ ধুয়ে দেখি একটি আঁচলে আঁকা ফুল ঝরে পড়ছে ধীরে, নিঃশব্দে দূরে বসে থাকা ওই ফড়িঙের ফুঁয়ে।
— ফুঁ
Report incorrect information