আজই শেষদিন! শেষ হচ্ছে বই ও পণ্যে ৭০% পর্যন্ত ছাড়! বছরের সেরা ডিল, রকমারি ক্লিয়ারেন্স সেল, ২০২৫
উপন্যাসটি লেখক ধ্রুপদ-এর ২য় উপন্যাস। এটি প্রথমে দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয়। প্রথম খণ্ড ২০০৩ সনের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় ‘বৈষম্য’ নামে প্রকাশিত হয় এবং বেশ প্রশংসা কুড়ায় পাঠকের। এই বইয়ের মাধ্যমেই লেখকের নাম পাঠকদের মাঝে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। পাঠক এর ২য় খণ্ডের জন্য প্রকাশনীর কাছে ধন্যা দিতে থাকে। ঠিক পরের বছর অর্থাৎ ২০০৪ সনের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় এর ২য় খণ্ড উপন্যাস ‘বেধ’ প্রকাশিত হয়ে এবং একইভাবে প্রথম খণ্ডের ন্যায় তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করে। পরবর্তীকালে খণ্ড দুটিকে একসাথে ‘বৈষম্যবেধ’ নামকরণে উপন্যাসটি প্রকাশ করা হয়। উপন্যাসটি লেখা হয়ে তিন প্রজন্মকে নিয়ে। অর্থাৎ দাদা-বাবা এবং ছেলে।
বৈষম্য আর বেধ, ২টা আলাদা শব্দ। এই শব্দদ্বয়ের মধ্যেই লুকিয়ে আছে অনেক কিছু। আমরা প্রজন্ম নিয়ে গল্প করি। দাদা, বাবা ও ছেলের গল্প। খুব মজা নিয়ে এই গল্পগুলো করি, কিন্তু এই ৩ প্রজন্মের মধ্য দিয়ে যে কত উত্থান পতন যায় তা আমরা কয়জনই বা জানি বা এই নিয়ে ভাবি?
৩ প্রজন্মের এই গভীর জীবন বিশ্লেষণ নিয়ে এই গল্প/উপন্যাস। শুনতে বোরিং লাগতে পারে কিন্তু বইয়ের লেখনশৈলী ও গল্প গাঠন আপনাকে মন্ত্র মুগ্ধের মতো বইয়ের শেষ পর্যন্ত পড়তে বাধ্য করবে।
ছোটবেলায় আমরা অনেকেই গল্প করেছি কিংবা বড়দের মুখে শুনেছি— “আমার বাপ-দাদারা জমিদার ছিল। সেই আমলে যদি দাদায় ১ টাকা দিয়ে এই জমি বিক্রি না করত, তাহলে আজও আমরা জমিদার থাকতাম।” কখনো কি ভেবে দেখেছেন, জমিদারি চলে গেলে কেমন অনুভূতি হয়? বা ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর জন্য নিরলস পরিশ্রম করেও যদি তার ফল অন্য কেউ ভোগ করে, কেমন লাগে?
আরেকটি প্রশ্ন ভাবুন- যুদ্ধের সময় নিজের গ্রাম বাঁচাতে পাকবাহিনীর সঙ্গে আপস করলে সে কি রাজাকার হয়ে যায়? এরকম জটিল প্রশ্ন গল্পের মাঝে ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে, যা পাঠককে ভাবায়।
বৈষম্যবেধ’ উপন্যাসটি পড়ার পর আমার মনের মধ্যে এক ধরনের ভারী অনুভূতি তৈরি হয়েছে, যা সহজেই মন থেকে সরাতে সক্ষম হই নাই। তিন প্রজন্মের জীবনসংগ্রাম, সময়ের পরিবর্তন এবং সেই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলানোর এক করুণ বাস্তবতা এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য।
পাঠকেরা যখন উপন্যাসটি পড়তে শুরু করে তখন লেখক তাদেরকে ভাবজগতে হারিয়ে নিয়ে যাবে। তারা যেন ঠিক তাদের দাদার সাথে আমলে ঘুরে বেড়াবে। হঠাৎ করেই আবার দেখবে তারা তাদের বাবার সাথে বাবার আমলে আছে। আবার ঠিক একইভাবে নিজের সময়টাতে ফিরে আসবে।
উপন্যাসটি পড়ে পাঠকেরা বারংবার লেখকের সাথে দেখা করতে চেয়েছেন কিন্তু লেখক তো মরীচিকা; সহজে ধরা দেয় না। পাঠকদের মনে আজ অবদি একটি প্রশ্ন এবং নালিশ লেখকের প্রতি। আর তা হলো; শরীফার মেয়ে বিলকিসের কেন এভাবে অপঘাতে মৃত্যু হবে। এতটা পাষান না হলেও পারতেন লেখক। কিন্তু লেখকের উত্তর, বাস্তবে বিলকিসের এভাবেই মৃত্যু হয়েছে। এভাবেই মৃত্যু হয় ওদের। কেননা এই সমাজ ওদের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি দেয় না। কোনোদিন দেয়নি; ভবিষ্যতে দেবে কিনা তা ভবিষ্যতই জানে।
আশা করি উপন্যাসটি আজ অবধি যেভাবে হাজারো পাঠকের মন জয় করে চলেছে তা বর্তমান ও ভবিষ্যতেও করবে।
Report incorrect information