এক রাজার দুই রানী, দুও আর সুও। রাজবাড়িতে সুয়োরানীর বড় আদর, বড় যত্ন। সুয়োরানী সাতমহল বাড়িতে থাকেন। সাত শ দাসী তার সেবা করে, পা ধোয়ায়, আলতা পরায়, চুল বাঁধে। সাত মালঞ্চের সাত সাজি ফুল, সেই ফুলে সুয়োরানী মালা গাঁথেন। সাত সিন্দুক-ভরা সাত-রাজার-ধন মানিকের গয়না, সেই গয়না অঙ্গে পরেন। সুয়োরানী রাজার প্রাণ।
আর দুওরানী— বড় রানী, তার বড় অনাদর, বড় অযত্ন। রাজা বিষ নয়নে দেখেন। একখানি ঘর দিয়েছেন— ভাঙাচোরা, এক দাসী দিয়েছেন— বোবা-কালা। পরতে দিয়েছেন জীর্ণ শাড়ি, শুতে দিয়েছেন— ছেঁড়া কাঁথা। দুওরানীর ঘরে রাজা একটি দিন আসেন, একবার বসেন, একটি কথা কয়ে উঠে যান।
সুয়োরানী— ছোট রানী, তারই ঘরে রাজা বারো মাস থাকেন।
একদিন রাজা রাজমন্ত্রীকে ডেকে বললেন— মন্ত্রী, দেশ-বিদেশ বেড়াতে যাব, তুমি জাহাজ সাজাও।
রাজার আজ্ঞায় রাজমন্ত্রী জাহাজ সাজাতে গেলেন। সাতখানা জাহাজ সাজাতে সাত মাস গেল। ছয় খানা জাহাজে রাজার চাকরবাকর যাবে, আর সোনার চাঁদোয়া-ঢাকা সোনার জাহাজে রাজা নিজে যাবেন।
মন্ত্রী এসে খবর দিলেন— মহারাজ, জাহাজ প্রস্তুত।