14 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
TK. 100TK. 95 You Save TK. 5 (5%)
In Stock (only 1 copy left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Related Products
Product Specification & Summary
সে এক নুক্তাবিহীন আলিফের মতো
রাবেয়া বসরী ছিলেন তার মা-বাপের চতুর্থ মেয়ে। রাবেয়া মানেও চতুর্থ। জন্ম থেকেই তিনি একটা সংখ্যার নাম পাইলেন। যারে তিনি টানতে টানতে একসময় এক-এ নিয়া তুললেন। আর একটা আলিফের মতো নুক্তাবিহীন হয়ে থাকতে থাকলেন এই এতদিন পরও।
রাবেয়ার জন্ম হইছিল গরিব বাপের ঘরে। তিনি যে রাতে জন্মাইলেন, ঘরে বাতি জ্বালানোর মতো তেল ছিল না। তার বাপরে তার মা যাইতে বললেন পড়শির বাড়ি, তেল ধার চাইতে। কিন্তু রাবেয়ার বাপ ওয়াদা করছিলেন জীবনে আর ধার চাইবেন না কারো কাছে, খোদা ছাড়া কারো কাছে হাত পাতবেন না। তবু আসন্ন সন্তানের জন্য বিবির অনুরোধে যাইতে হইলো। তবে তিনি পড়শির দরজায় টোকা দিলেন না, শুধু হাতের তালু দিয়া নিরবে ছুঁইলেন। আর ফিরা আসলেন এবং কানতে কানতে একসময় ঘুমায় গেলেন।
চোখের পানি কোটরে কিছুটা শুকায় আসছে কিংবা তখনও চোখের পাতা ভিজাই ছিল, উনি একটা স্বপ্ন দেখলেন। তার স্বপ্নে স্বয়ং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চইলা আসছেন। আর তারে বলতেছেন, ও মিয়া কানতেছ কেন! বড় আলোর কাছে সব সময় ছোট আলো নিভা যাইতে চায়। তোমার ঘরে এক বিশেষ মানুষের জন্ম হইতেছে। যার সুপারিশে আমার হাজারো উম্মত কঠিন বিচার দিনে মুক্তি পাবে। ওঠো, আর বসরার গভর্নর ঈসার কাছে যাও। একটা চিঠি তারে দিও। চিঠিতে লেখবা - ‘তুমি প্রতি রাতে ঘুমের আগে ১শ বার নবীর নামে দরুদ পইড়া থাকো, আর জুমার রাতে পড় ৪শ বার। গত জুমায় তুমি দরুদ পড় নাই। তার বদলায় ৪শ দিনার দান কর।’
রাবেয়ার বুযুর্গ বাপ এইটুকু দেখার পর জাইগা উঠলেন এবং ফের কানতে থাকলেন। তার চোখের পানিতে দাড়ি ভিজা যাইতেছিল। সকাল হইলে তিনি চিঠিটা লিখলেন। আর ডাকের মাধ্যমে পাঠায় দিলেন। বসরার গর্ভনর রাসুলের পয়গামে খুশিতে আত্মহারা হয়ে তৎক্ষণাত দরবেশদের মাঝে ২ হাজার দিনার বিলি করলেন। আর লোক মারফত ৪শ দিনার পাঠাইলেন রাবেয়ার বাবার কাছে। এর কিছুক্ষণ পর নিজে হাজির হয়ে বললেন, আপনার যখন যা কিছু লাগে, আমারে জানাবেন। আমি আপনার খেদমতের জন্য সদাপ্রস্তুত। আপনার জন্য আমার দরবারের কোনো দরজায় খিল নাই বলে জানবেন। এরপর গর্ভনর বিদায় নিলে রাবেয়ার বাবা দরকারি সব সামানপাতি কিনা আনলেন। আর কাঁদতে থাকলেন, যতটা কাঁদা যায় মনের ভিতর।