ফ্ল্যাপঃ "বীরাঙ্গনাকে লেখা চিঠি " বইটি মু্ক্তিযুদ্ধা বীরাঙ্গনা মা বোনদের জীবন ও দহনের ইতিবৃত্ত। বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের কাছে বীরাঙ্গনা মা বোনদের জীবন চিত্র তুলে ধরার এক সাবলীল প্রয়াসে নতুন প্রজন্মের ভাবনা লিপিবদ্ধ হয়েছে। একাত্তরের দিনগুলোতে দীর্ঘ নয়মাস পাক হানাদার বাহিনী কীভাবে বাংলার মা বোনদের উপর যৌন নির্যাতন করেছেন! তাদের কতটা আত্মাত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীন হলো আমাদের বাংলাদেশ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বীরাঙ্গনা মা বোনদের জীবনে কতটা অপমান, অবহেলা এবং ঘৃণা উপহার দিয়েছিলাম আমরা বাঙালিরা। তার খণ্ডচিত্র ও বীরাঙ্গনা মা বোনদের দুর্বিসহ অসহনীয় জীবন লেখক তার দায়িত্ববোধ ও বিবেকের তাড়না থেকে এখানে তুলে ধরেছেন চিঠির অনুরণনে। পুরো বাঙালি জাতির মনন, চিন্তা এবং মানবিক বোধের বিশুদ্ধতায় এই চিঠিগুলো বীরাঙ্গনাদের প্রতি সম্মান প্রতিষ্ঠায় এক অনবদ্য ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। বীরাঙ্গনা মা বোনদের প্রতি সম্মান ও দায়িত্ব বোধ থেকে লেখক এই বইটি লিখেছেন। লেখকের প্রয়াস সকল বয়সের বাঙালি থেকে শুরু করে আগামীর প্রজন্ম বীরাঙ্গনাদেরকে সম্মানের সঙ্গে মনে রাখুক। বীরাঙ্গনাদের ধৈর্য এবং আত্মবিসর্জনের শিক্ষা থেকে জীবনে শিক্ষা নিতে শিখুক প্রজন্মের সকলে। এটাই লেখকের চাওয়া। যা তার লেখার সুস্পষ্ট বর্ণনায় সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। লেখকের অনান্য সকল বইগুলোর মতো এই বইটিও তার নিজস্বতায় সকল শ্রণী ও বয়সের মানুষের ও পাঠকদের মনে এক বিশেষ সম্মানে জায়গা করে নেবে বলে আশা করছি।
লেখক নাজনীন নাহার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমফিল করেছেন এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এলএলবি করেছেন। স্বামী সন্তান নিয়ে তার সংসার। ইতোমধ্যে তার লেখা বিভিন্ন জনরার ৪২টি একক মৌলিক বই প্রকাশিত হয়েছে। একজন সৃষ্টিশীল মানুষ তিনি। তার লেখার মূল উপজীব্য হচ্ছে মানুষ, প্রেম, দেশাত্মবোধ, মনুষ্যত্ব এবং মানবতা। তিনি নিভৃতচারী একজন মানুষ। সংসারের পাশাপাশি নিজেকে ডুবিয়ে রাখেন সাহিত্য চর্চায়। তাইতো নিজেকে নয় নিজের লেখা, বোধ, উপলব্ধি তথা নিজের সৃষ্টিকে পুরোদস্তুর সমৃদ্ধ করতে চান তিনি। পৌঁছে দিতে চান মানুষের মন ও মগজের ভাবনায়। মানুষের আত্মউপলব্ধিতে রোপণ করতে চান বিশুদ্ধ বোধের অখণ্ড সন্তরণ। লেখার মাধ্যমে তিনি মানুষের কল্যাণ করতে চান। মানুষের মনন ও বিশ্বাসের পৃথিবীতে মানবিকতার বিশুদ্ধ বোধ ছড়িয়ে দিতে চান। তার লেখালেখির উদ্দেশ্য এটাই।