কহলিল জীবরান একজন লেবানিজ-আমেরিকান লেখক। বলা হয়ে থাকে শেক্সপিয়ার আর লাউজির পরে জীবরানের বই-ই এখন পর্যন্ত সব থেকে বেশি বিক্রিত বই।
তিনি একাধারে কবি, লেখক, দার্শনিক, ধর্মতত্ত্ববিদ ও অসাধারণ চিত্রশিল্পী। তার 'দ্য প্রফেট' সাহিত্য ইতিহাসের আলোড়ন জাগনো একটি বই। এই বই এ পর্যন্ত মোট আশিটিরও ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯২৩ সালে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। জীবরানের এ বই এখনো এক বিস্ময়ের নাম। এত বছর পরেও এই বইয়ের আবেদন একটুও কমেনি। বইতে জীবরানের নিজের আঁকা ১২ টি চিত্রকর্ম আছে। বইয়ের মূল চরিত্র আল-মুস্তাফা। তিনি বারো বছর ধরে অপেক্ষা করছেন তার জাহাজের যাতে করে তিনি তার স্বদেশে ফিরে যেতে পারেন। এই বারোটি বছর তিনি কাটিয়েছেন ওরফেলিসে। আল-মুস্তাফার একাকী সময়, দুঃখের সময়ের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে ঐ দেশের মানুষ ও মাটি। একদিন পাহাড়ের উপর উঠে তিনি তার জন্য আসা জাহাজকে দেখতে পেলেন। জাহাজে তার স্বদেশী মানুষেরা তার জন্য অপেক্ষা করছিল। তার মন আনন্দে ভরে উঠলো। আবার একইসাথে তাকে বিষণ্ণতায়ও ঘিরে ধরলো। কারণ এই বারো বছরে তিনি ওরফেলিসের জনগণের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছিলেন। তাই বিদায় বেলায় এই দুঃখ তাকে জর্জরিত করে ফেলে। বিদায়লগ্নে তিনি এক দল মানুষের উদ্দেশ্যে জীবন এবং মানুষের অবস্থার বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেন। বইটি প্রেম, বিয়ে, সন্তান, দান, খাওয়া-দাওয়া, কাজ, আনন্দ ও দুঃখ, ঘর, কাপড়-চোপড়, ক্রয় এবং বিক্রয়, অপরাধ ও শাস্তি, আইন, স্বাধীনতা, কারণ এবং আবেগ, ব্যথা, আত্মদর্শন, শিক্ষাদান, বন্ধুত্ব, কথা, সময়, ভালো এবং মন্দ, প্রার্থনা, আনন্দ, সৌন্দর্য, ধর্ম, এবং মৃত্যু অনুচ্ছেদে বিভক্ত। প্রত্যেক অনুচ্ছেদে আছে কাব্যিক ঢঙে জীবনের নানা দিকের দার্শনিক উপস্থাপন। আলমিট্রা নামক জনৈক নারীর ভালোবাসা বিষয়ক প্রশ্নের মাধ্যমেই মূলত পুস্তকের শুরু। একে একে কবি, কৃষক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, আইনজীবী, পান্থশালার মালিকসহ নগরের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন তুলে। প্রতিক্ষেত্রে আল মুস্তফার সস্নেহ উত্তর স্বভাবতই হৃদয়গ্রাহী।