সালেহা বাসর ঘরে ঘােমটা দিয়ে বসে আছে। তার চোখ
বেয়ে টপাটপ করে জল পড়ছে। মাওলানা বললাে, আইজ এমন এক রাত, এই রাত্রে সব
স্বামীই নতুন বউকে কিছু না কিছু দেয়। আমি এমন একজন, যার দেওয়ার মতাে কিছু নাই। আমি নিতান্ত গরীব
মানুষ। তােমার মােহরানা শোধ করার ক্ষমতাও আমার নাই। মায়ের খুব শখ আছিল তার ছেলের বউ দেখে যাবে,
সেইটা তার কপালে জুটে নাই। ওরা আমার মায়ের
জানাজাটাও পড়তে দেয় নাই। আমি তােমার জন্য কাগজে দুইটা লাইন লিখেছি। জানি না ভালাে লাগবে কিনা। চলাে
বাইরে যাই আসমানে বিরাট চান উঠেছে। সালেহা চোখের জল মুছে ভারী গলায় বললাে, আমার কিছু
লাগবে না। আপনি আপনার লেখাটা পড়ে শুনান। মাওলানা কাঁপা গলায় পড়লাে,
"আসমানের ওই চান আজই জমিনে নামিল, আমার আইন্ধ্যার ঘরখানি পসরও করিল।"
কাগজটা দেন আমি সারা জীবন আগলায়ে রাখবাে। আমার
মন ভালাে হয়েছে। টাকা-পয়সায় সুখ থাকে না, আপনার হাতটা একটু ধরতে দিবেন?
মাওলানা হাতটি বাড়িয়ে দিলাে।
সালেহা হাতটি ধরে বললাে, আমি মারা যাওয়ার আগে এই হাত ছাইরেন না। এইটাই আমার চাওয়া। 1.
সালেহার কথা শুনে মাওলানার চোখ ছলছল করে উঠলাে। সে চোখের জল লুকিয়ে রাখতে পারলাে না। এই অশ্রুর
নামই হয়তাে আনন্দ অশ্রু।
মনির মােহাম্মদ