আজই শেষদিন! শেষ হচ্ছে বই ও পণ্যে ৭০% পর্যন্ত ছাড়! বছরের সেরা ডিল, রকমারি ক্লিয়ারেন্স সেল, ২০২৫
Related Products
Product Specification & Summary
সুরুজ মিয়ার একটা নৌকা আছে। এই নৌকাটাই তার একমাত্র সম্বল। এই নৌকার মাঝেই তার ঘর—সংসার সব। সে এখন আর চোখে দেখে না। আগে আবছা আবছা দেখতো। তার যখন থেকে চোখের আলো কমে আসে তখন থেকেই ফিরুজ মাছ ধরতে শুরু করে। ফিরুজ তার একমাত্র ছেলে। চোখে দেখতে পাওয়ার আগ অবধি সুরুজ মিয়াই মাছ ধরতো। ফিরুজ এখনো মাছ ধরার কৌশলটা আয়ত্ত করতে পারেনি ভালোভাবে, তাও ধরছে কম বেশি।
ফিরুজ যেদিন একদমই মাছ পায় না সেদিন তাদের কারোরই আর খাওয়া হয়ে উঠে না। ক্ষুধার যন্ত্রণায় চোখ ভরে আসে জলে কখনো কখনো। আহা, সে কি যন্ত্রণার? সেদিন কোনো আনন্দ তো থাকেই না তাদের। আর যেদিন অনেক মাছ পায়, জাল ভরে আসে মাছে সেদিন তো তাদের আনন্দের আর কোনো সীমা থাকে না। তাদের আনন্দ বেদনাটা থাকে কেবল মাছ পাওয়া না পাওয়ার মাঝেই। এছাড়া তাদের আর কোনো আনন্দ বেদনা নেই।
তাদের স্বপ্নটা যেন বন্দি থাকে মাছ ধরার জালের ভেতর। আর ভয় তো থাকেই। নৌকায় করে কোনো না কোনো ডাকাতদল এসে স্বপ্নবন্দী এই জাল ছিনিয়ে নেওয়ার ভয়। নিয়েও যায় অবশ্য। কেবল জালই নিয়ে যায় না, সাথে করে নিয়ে যায় সুরুজ মিয়ার আর কমলাবিবির জীবনও। কমলাবিবি সুরুজ মিয়ার স্ত্রী। সাজানো গোছানো নৌকাটাকে যেন একেবারে এলোমেলো করে দিয়ে যায়, লন্ডভণ্ড করে দিয়ে যায় স্বপ্ন, আশা সবকিছুকেই।
তাও জীবন থেমে থাকে না। জীবনের যেভাবে চলার কথা সে ঠিক সেভাবেই চলে। এলোমেলো হয়ে যাওয়া নৌকাটাকে ফিরুজ আবার সাজাতে শুরু করে, স্বপ্নবন্দী যে জাল ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা সে জাল আবার বুনতে শুরু করে হামিদা। হামিদা ফিরুজের স্ত্রী। সেও এক জেলে কন্যা। সে আবার জাল বুনতে পারে ভালো। নতুন করে জাল বুনে যেন ফিরুজের ভেঙে যাওয়া স্বপ্নটার জোড়া এই হামিদাই লাগায় কেবল।