ক্যারিয়ার শুরুর কয়েক বছর পর যখন পেছন ফিরে তাকালাম, দীর্ঘশ্বাস মেশানো একটা হাসি পেয়েছিল। কারণ, স্রেফ ৮-১০টা কথা যদি শুরুর দিনটা থেকেই জানতাম, তাহলে আজ স্যালারিটা দ্বিগুণেরও বেশি হত! কোন কোন বিষয়ে? তবে সেখানো হাসি ছিলো এই কারণে যে, দেখে-ঠেকে-ঠকে-যেভাবেই হোক, শিখে নিতে পেরেছি। সম্মানযোগ্য একটা জায়গায় আসতে পেরেছি। দুটো ইন্টারন্যাশনাল এওয়ার্ড পেয়েছি, অগণিত মানুষের ভালোবাসা ও সম্মান পেয়েছি। তারপরেও একটা চিন্তা এসেছিল, ইশ! কেন কেউ আমাকে জানায় নি তখন? শুধু আমি না, এদেশের প্রায় প্রতিটা প্রফেশনালের এমন অজানা জিনিস থাকে ক্যারিয়ারের শুরুতে। খুব লাকি যারা, তারা বেঁচে যান। বাকিরা সবাই এটার কারণে আটকে যান।
কি সেই বিষয়গুলি? - স্যালারি নেগোসিয়েশনে কি বলা যায় এবং কি বলা যায় না - 3 Idiots সিনেমার রাজু রাস্তোগির মত ইন্টারভিউ আতঙ্কে কুপোকাত না হয়ে কিভাবে ইন্টারভিউতে বাজিমাৎ করতে হয় - নেটওয়ার্কিং করে নিজের ইনফ্লুয়েন্স বাড়াবেন কিভাবে - চাকরি বা ক্যারিয়ার সুইচের আগে কি কি ভাবতে হবে - ক্যারিয়ার বেছে নিতে কি কি করতে হয় - পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং কিভাবে আপনাকে আরো ভ্যালুয়েবল এমপ্লয়ি বানাতে পারে এবং সারাজীবনের সম্পদ হয়ে আপনাকে সাহায্য করতে পারে - ভালো মেন্টরের বৈশিষ্ট্য এবং কিভাবে কাউকে মেন্টর হবার রিকোয়েস্ট করতে হয় - ঠিকমত সিভি ও কভার লেটার তৈরি করার নিয়ম - রিক্রুটমেন্টের গ্রুপ ডিস্কাশন স্টেজে ভালো করবেন কিভাবে - ইন্টারভিউর বিভিন্ন স্টেজে ক্যান্ডিডেট কি কি কারণে বাদ পড়ে যান তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, ক্যারিয়ারের এই না-বলা সব কথাগুলি গুছিয়ে একটা বই লিখব। সেই থেকে শুরু। সেদিনের আইডিয়ার মোমের শিখা কয়েক বছর পরে একটা আগ্নেয়গিরি হিসেবে এই বইয়ে রুপ নিয়েছে। যা গলিয়ে দিতে পারবে আপনার ক্যারিয়ার কনফিউশন এবং মসৃণ করবে ক্যারিয়ারের যাত্রা। আপনি যাতে পড়তে পড়তে বোর ফিল না করেন, তাই বইয়ে একটু পর পরই আছে ছোট্ট গল্প, নাসিরুদ্দীন হোজ্জা-গোপাল ভাঁড়ের কৌতুক, বিভিন্ন সিনেমার রেফারেন্স। এক চ্যাপ্টারের সবগুলো লেসনকে এক ঝলকে দেখার জন্যে প্রতি চ্যাপ্টারের পরেই আছে চেকলিস্ট। গুছিয়ে প্রকাশ করার জন্যে মাঝে মাঝেই পাবেন ইনফোগ্রাফিক (সাদা কালো)। জীবনের অনেকটুকু সময় দিয়ে এই বইটি লেখা, যাতে এখন থেকে আর কোন ভার্সিটি স্টুডেন্ট বা ইয়ং প্রোফেশনালের আফসোস করতে না হয়, “ইশ! কেন কেউ আমাকে জানায় নি তখন?” সফল হয়েছি কিনা, সেটা পাঠকরাই বলতে পারবেন।
সোহান হায়দার বর্তমানে AI Buddy Catalyst Labs নামে একটি কানাডিয়ান AI স্টার্টআপের ফাউন্ডার, যা ইনভেস্ট অটোয়ার IO Flex ভেঞ্চার প্রোগ্রামের অংশ। কানাডিয়ান ও বাংলাদেশি ক্লায়েন্ট দিয়ে শুরু হলেও বিশ্বব্যাপী কাজ করার স্বপ্ন। এর আগে বাংলাদেশে একসময়ের জনপ্রিয় স্মার্টিফায়ার ট্রেইনিং অ্যান্ড কনসালটেশনের ফাউন্ডার ছিলেন। দুইবার এমবিএ ডিগ্রি নিয়েছেন, ২০২৪-এ ইউনিভার্সিটি অব অটোয়া এবং ২০১৬-তে ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা থেকে। এ ছাড়াও তিনি PMP ও CSPO সার্টিফিকেশন নিয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবনে প্রোডাক্টিভিটি, শিল্প, ফিল্মমেকিং নিয়ে প্যাশনেট। প্রিয় কাজ ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবা।
অকিক অর্ণব একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা এবং সিরিয়াল ফাউন্ডার। বর্তমানে তিনি কানাডার অটোয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠা ‘AI Buddy Catalyst Labs’-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা, সিটিও (CTO) এবং সল্যুশন আর্কিটেক্ট হিসেবে জেনারেটিভ এআই ও এজেন্টিক অটোমেশনবিষয়ক গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করা অকিক তিন বছর ধরে জেনারেটিভ এআই নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করছেন। একাধিক স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অকিক এন্টারপ্রাইজ গ্রেড এআই সল্যুশন তৈরিতে বিশেষ পারদর্শী। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, আগামী দিনের বাণিজ্যে তারাই এগিয়ে থাকবে, যারা প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি স্তরে এআইয়ের বুদ্ধিদীপ্ত ও কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারবে।