ফখরুল হাসান
মানুষ জন্মসূত্রে একটা নাম পায়। নামধারী ব্যক্তিটি কোনো না কোনোভাবে তার নাম পরিচিতি প্রতিদিনই সম্প্রসারণ করে যায়। কোনো কোনো সময় সেটা তার অজান্তেই ঘটে। আবার ব্যক্তিটি তার মনুষ্য জীবনের প্রয়োজনে পরিপুষ্ট করে, প্রস্ফুটিত করে। ফখরুল হাসান তাঁদের একজন।
তিনি শেকড়-সন্ধানী লেখক, লোকসংস্কৃতি গবেষক ও সংগ্রাহক। জন্মের শেকড় নরসিংদী’র রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের মির্জানগর গ্রামে; ১৫ মার্চ ১৯৮২ সালে। পিতা হাফেজ আবদুল ওয়াহাব, মাতা- আনোয়ারা বেগম। গ্রামীণ পরিবেশে তাঁর বেড়ে ওঠা। তারুণ্যের সূচনালগ্ন থেকেই কবিতা এবং প্রবন্ধের মাধ্যমে সাহিত্যে যাত্রা। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, সাময়িকীতে প্রতিবেদন প্রবন্ধসহ অনেক সাহিত্যকর্ম প্রকাশিত হয়েছে। একজন সাহিত্যিকই নন, তাঁকে একজন চৌকষ সমাজদ্রষ্টাও বলা যায়। ছাত্র জীবন থেকে স্বাধীন বাংলার রূপকার শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শের সৈনিক হিসেবে তার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকবোধের স্ফূরণ ঘটে।
তাঁর সম্পাদিত ‘মেঘনা পাড়ের রায়পুরা’ ২০২৩ সালে প্রকাশিত একটি লোক গবেষণামূলক গ্রন্থ। এছাড়াও ২০২৪ সালে তাঁর সংকলিত ও সম্পাদিত গ্রন্থ ‘নরসিংদীর আঞ্চলিক শব্দকোষ’ প্রকাশিত হয়। প্রবন্ধ/গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য ‘প্রতিভা প্রকাশ সাহিত্য পুরস্কার-২০২৪’ অর্জন করেছেন।
অসংখ্য প্রবন্ধ লিখে বিদগ্ধজনের দৃৃষ্টি কেড়েছেন। সাদামাটা জীবন যাপনে সদা হাস্যোজ্জ্বল এবং ব্যক্তিজীবনে বিনয়ী, শান্ত প্রকৃতির মানুষ। সকালে জেগে ওঠার পর থেকে রাতে ঘুমানোর আগপর্যন্ত বিরামহীন কাজ করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন স্মারক মুদ্রা, কাগজি নোট, কয়েন, ডাকটিকেট-সহ লোক সংস্কৃতি অনুসন্ধানের মাধ্যমে নরসিংদীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত দুর্লভ তৈজষপত্র নিদর্শন সম্ভার নিয়ে নিজের বাড়িতে গড়ে তুলেছেন একটি ‘সংগ্রহশালা’। শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, খেলাধুলা, ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণে এবং আর্থ-সামাজিক কর্মকান্ডের স্বীকৃতিস্বরূপ ভূষিত হয়েছেন নানা পুরস্কার ও সম্মাননায়। শিল্প-সাহিত্য-লোকসংস্কৃতি বিষয়ক সাময়িকী ‘চিৎপ্রকর্ষের’ সম্পাদক। ব্যক্তি জীবনে সহধর্মিনী সামসুন্নাহার লুনা, পুত্র-ওয়াসিফ আল হাসান প্রহরকে নিয়ে তাঁর সংসার।