আজাদ আর শারমীনের সুখের সংসার। এখনো সন্তান না হওয়ায় কিছুটা দুঃখ আছে বৈকি, তবে আজাদ বিশ্বাস করে আজ হোক কাল হোক, সংসারে সন্তান আসবে। সুখের এই সংসারটা আচমকাই এলোমেলো হয়ে গেল মায়াস্বর্গের প্রভাবে। শারমীন হঠাৎ হঠাৎ হারিয়ে যেতে শুরু করল মায়াস্বর্গ নামক অদ্ভুত এক কাল্পনিক জগতে। মায়াস্বর্গে শারমীনের দ্বিতীয় স্বামী আছে, তার নামও আজাদ, চেহারাও একইরকম। আর রয়েছে ফুটফুটে এক মেয়ে, নাম নওমি। দিন যতই পার হতে থাকে, মায়াস্বর্গের প্রতি শারমীনের মোহ তত বাড়তে থাকে। একসময় ভুলে যেতে থাকে বাস্তব জীবনের স্বামী, সংসারকে। গভীর এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে আজাদ শরনাপন্ন হয় ডাক্তার তরফদারের। ডাক্তার তরফদার প্রথমে ভেবেছিলেন শারমীনের অসুস্থতাটা বোধহয় সিজোফ্রেনিয়া হবে। কিন্তু যখন নিশ্চিত হলেন মায়াস্বর্গের সবকিছু কাল্পনিক নয়, অনেক অজানা আর গোপন সত্য রয়েছে মায়াস্বর্গের ধুম্রজালে , তখন সিজোফ্রেনিয়ার ধারণা থেকে বের হয়ে এলেন তিনি। ধীরে ধীরে বুঝতে পারলেন শারমীনের জীবনের অনেক ঘটনাই অজানা রয়েছে আজাদের। পাশাপাশি শারমীনের রয়েছে এক অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা। দূর থেকে হলেও সে সবার অলক্ষ্যে যোগাযোগ করতে পারে, সময় কাটাতে পারে প্রিয়, অতিপ্রিয় আর ভালোবাসার মানুষের সাথে। পৃথিবীর খুব অল্পসংখ্যক মানুষের এই ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু শারমীনের সময় যে শেষ! মৃত্যু তার দরজায় কড়া নাড়ছে! আর কয়েকটা দিন মাত্র! ডাক্তার তরফদার কী শেষ পর্যন্ত পেয়েছিলেন মায়াস্বর্গের সন্ধান? আর কী পরিণতি হয়েছিল শারমীন আর আজাদের সংসারের? শারমীনের ঐশরিক ক্ষমতারও বা ব্যাখ্যা কী ছিল?
লেখক মোশতাক আহমেদ এর জন্ম ১৯৭৫ সালেল ৩০ ডিসেম্বর, ফরিদপুর জেলায়। তিনি ঢাকা ভার্সিটির ফার্মেসী বিভাগ হতে মাষ্টার্স এবং আইবিএ হতে এমবিএ ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের লেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে ক্রিমিনোলজিতে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি সাহিত্যপ্রেমী, লেখালেখির প্রতি আগ্রহ আকাশচুম্বী। তার প্রথম উপন্যাস জকি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। সায়েন্স ফিকশন লেখক হিসেবে সুপরিচিত হলেও নিয়মিত গোয়েন্দা, ভৌতিক, প্যারাসাইকোলজি, মুক্তিযুদ্ধ, কিশোর ও ভ্রমণ উপন্যাসও লিখে চলেছেন। বিভিন্ন জনরায় লেখালেখির জন্য বহুমাত্রিক লেখক হিসেবেও তিনি সর্বজনবিদিত। তার রচিত উপন্যাসের সংখ্যা শতাধিক। বাংলাসাহিত্যে অনবদ্য অবদানের জন্য তিনি ২০১৭ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়া তিনি কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার, চ্যানেল আই সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরুস্কারও লাভ করেন।