বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ থেকে নেওয়া
পরীবানু দেখতে ঠিক পরীর মতো নয়। গরিবের মেয়ে। গায়ের রঙ শ্যামলা। সারল্যভরা মুখ। মিষ্টি কিশোরী। লেখাপড়ায় খুব আগ্রহ। কিন্তু লেখাপড়া তার হয় না বাবার দারিদ্র্য এবং খামখেয়ালির কারণে। স্কুল ছেড়ে কৈশোরেই পরীবানুকে হতে হয় কাজের মেয়ে। তার মায়েরও সেই
একই পরিচয় - কাজের বুয়া।
কিন্তু ঠিক এমনটি হবার কথা ছিল না।
পরীবানুর জীবনের সব সম্ভাবনার দুয়ার এভাবে বন্ধ হয়ে যাবার কথা ছিল না। কথা ছিল না তার দুচোখের স্বপ্ন এভাবে ঝরে যাবারও।
মোহিনী মিলের শ্রমিক জুব্বার মিস্ত্রির সংসারে একদিন এতটা অভাব ছিল না। মিলের চাকা বন্ধ হবার কারণে প্রায় সব শ্রমিকপরিবার অচল হয়ে পড়ে, ছেলেমেয়ের স্বপ্ন ভেঙে যায়, পায়ের তলে শক্ত মাটি পায় না দাঁড়াবার। মিলের শ্রমিক, পেশা বদলে হয়ে যায় রেলের মুটে কিংবা রিক্সাঅলা। শ্রমিকপরিবারের শিশুকিশোর সন্তানদের চোখ থেকে সরে যায় স্বপ্ন এবং সম্ভাবনার ছায়া। তাদেরই কেউ কেউ ধীরে ধীরে হয়ে যায় বিপথগামী। পরীবানু বেরিয়ে আসতে চায় এমনই এক বৃত্ত থেকে। বস্তিবাসী ছিন্নমূল স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আবার তাকে স্বপ্ন দেখায়। বাল্যবিয়ের অভিশপ্ত থাবা থেকে তারা সবাই উদ্ধার করে পরীবানুকে। পরীবানুর চারিপাশের বৈরী বৃত্ত বেয়ে বেরিয়ে আসার গল্প নিয়েই রচিত হয়েছে রফিকুর রশীদের কিশোর উপন্যাস 'স্কুলে যাবার গল্প'।