বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ থেকে নেওয়া
মাধবী সেই রাতে বারান্দায় যায়নি। নগ্ন শরীরে অনেকক্ষণ বসে ছিলো ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে। কোনো এক অজানা কম্পন ছিলো ওর মনের গভীরে। কম্পনটা একেবারেই ডোকরা, আর কিছুটা আরণ্যক। কেন যেন কয়েকবার ওর ইচ্ছে হলো অনাবৃত শরীরেই বারান্দায় চলে যেতে। আতিকের সাথে বারান্দায় দাঁড়িয়ে জ্বলন্ত সিগারেট হাতে কথা সিগারেট জ্বললে বলতে। হাতে সিগারেট জ্বললে হয় তো মনের আগুন কিছুটা দমে যায়, বরফের মতো জমাট বাঁধা কথাগুলো মনের ভেতরে গলতে শুরু করে। ধোঁয়ার সাথে সেই কথাগুলো বলা যায় স্বাচ্ছন্দে। নইলে মানুষ ধূমপান করে কেন?
কিন্তু মনের গহীনে থাকা মনটা সেই আহ্বানে পুরোপুরি সাড়া দিলো না। কেন দিলো না সেটা মাধবীর জানা নেই। সেই রাতে আয়নার দিকে তাকিয়ে বরাবরের মতো নিজের রূপ বা শরীরের নগ্নতার দৃশ্য দেখে মাধবীর মন কোনো মুগ্ধতার রঙে রাঙেনি। ওর দৃষ্টি ছিলো চোখের ভেতরে জমাট শূন্যতায়, অথবা মনের গহীনে থাকা মনটার রিক্ততায়। নিজঘরে আয়নায় তাকিয়ে শূন্যতা আর রিক্ততাকে দেখার অনুভূতি অনেক অপ্রিয় লজ্জার। সেই লজ্জার রঙ ধূসর। নিজের নগ্নতা বা রূপের দৃশ্য দেখে খুব প্রিয় লজ্জার অরুণ বর্ণের সাথে সেই রঙের কোনো মিলই নেই। অথচ দুটাই লজ্জা। এই বিভেদ মাধবীর জানা ছিলো না। সেই রাতে ধূসর লজ্জাটার সাথে ওর প্রথম দেখা হলো।