উঠোনের এক কোনায় বসে খুব মনোযোগ সহকারে জাল সেলাই করছে
রতন জেলে। তার এক হাতে সুঁই। আরেক হাতে সূতো। বাম পায়ের
দুই আঙ্গুল দিয়ে জালের ছেঁড়া অংশ চেপে ধরেছেন। সুঁই চলছে দ্রুত। দুপুর
থেকে একটানা সেলাইয়ের কাজ করছেন তিনি। এখন অনেকটা ক্লান্ত
লাগছে তাকে। কাঁচাপাকা চুল। চুলগুলো বাতাসে নড়ছে। গায়ে কিছু নেই।
পড়নে শাদা দুতি। কিন্তু ময়লায় শাদা ধুতি অনেকটা মেটে রঙ ধারণ
করেছে। এক পা হাঁটু গেড়ে রাখা। অন্য পা সামনে বাড়িয়ে মাটিতে রাখা।
উদোম শরীর থেকে ঘাম ঝরছে। হঠাৎ সে ডান হাত থেকে সুঁইটা মাটিতে
রাখলো। কাছেই হুক্কা। হুক্কাটা হাতে নিলো। বাম হাতের দু'টো আঙ্গুল দিয়ে
হুক্কার কলকের আগুন দেখে নিলো। তারপর হুক্কা টানতে লাগলো।
কয়েকটা টান দেয় সে। হুক্কার পানির থলেতে গর গর করে আওয়াজ হলো।
মুখ থেকে রতন তামাকের ধুয়া ছাড়লো দু'বার। ধুয়ার কুণ্ডুলি উড়ে যায়
আকাশের দিকে। মুখ উঁচু করে চারদিক তাকায়। সে বললো, হাইনজা
অইয়া গেল। টেরই পাইলাম না বউ। জালডার সেলাই শেষ অইল না।