আঠারোশ একাশি সনের শেষ দিককার কথা।
অবিভক্ত ভারতবর্ষের বাংলা অঞ্চল। এ অঞ্চলের মালদহ জেলার পূর্বদিকে তৎকালীন ইংরেজ বাজারের নিকটবর্তী মহকুমাটির নাম নাচোল। এই নাচোলের অভ্যন্তরে শান্ত নিস্তরঙ্গ চন্ডীশ্বর গ্রামের দোর্দন্ড প্রতাপশালী জমিদার হলেন যোগেশ্বর হরকৃষ্ণ গঙ্গাধর। অলিখিত এক অমোঘ নিয়মের মতো প্রজার উপর অত্যাচার আর নিষ্ঠুরতা সেকালের অধিকাংশ জমিদারের প্রবৃত্তিতে থাকলেও হরকৃষ্ণ গঙ্গাধর প্রকৃতিতে তা নন।
এস্টেট যেমন তার আয়তনে বিশাল, প্রজাসাধারণের প্রতি হৃদয়াবেগও তার সাথে সমানুপাতিক। একথা সত্য, অলঙ্ঘনীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যতীত খাজনা আদায়ে এক চুলও এদিক ওদিক তিনি সহজে হতে দেন না। কিন্তু এর জন্য জমিদারীর ভেতরে, প্রজাজনের জীবনাচরণে অনাকাঙ্খিত উপদ্রব তিনি করেছেন, এ ধরনের কথাও কখনো শোনা যায়নি। লোকের চোখে জমিদার তিনি তুলনাতীত; বিনয়ী, সদাচারী আর সাক্ষাৎ করুণার অবতার।