বাবা কিছুটা বেশি বয়সে বিয়ে করেন। মা ছিলেন তার প্রায় ২০ বছরের ছোট। তাদের দাম্পত্যের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আমি কালি-ঝুলি মাখা এই দুনিয়ার আলো দেখলাম। গর্ভাবস্থায় আমার অস্তিত্বকে মুছে ফেলার একটা জোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু কিশোরী মায়ের শরীর ওষুধের ধকলে দুর্বল হয়ে পড়ায় এবং আরও কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় শেষপর্যন্ত আমি টিকে যাই। বাবা বাধ্য হয়ে বিষয়টি মেনে নিলেও দীর্ঘদিন আমাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি। সে সময় মার সঙ্গেও তিনি সদয় আচরণ করেননি। এসব কথা আমি মায়ের কাছেই শুনেছি।
মজার ব্যাপার হলো, এতসব ঘটনার পরও আমি বাবাকে খুব পছন্দ করতাম। যদিও দুজনার মধ্যে একটা অদ্ভুত ব্যবধান ছিল। তিনি আমাকে 'আপনি' বলে সম্বোধন করতেন। আর কোনো বাবা এমনটা করেন কিনা আমার জানা নেই। আমিও তাকে 'আপনি' বলতাম। মায়ের বেলায় বিষয়টা ছিল তুমি-তুমি। কারণ মাকে অনেক কাছের মানুষ বলে মনে হতো। তার কাছে নির্দ্বিধায় সব আবদার করা যেত। দুষ্টুমি-অত্যাচার সয়েও প্রশ্রয় দিত মা। বাবাকে পছন্দ করলেও তার সঙ্গে ছিল ভয় আর দূরত্বের সম্পর্ক।