8 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
TK. 120TK. 103 You Save TK. 17 (14%)
আজই শেষদিন! শেষ হচ্ছে বই ও পণ্যে ৭০% পর্যন্ত ছাড়! বছরের সেরা ডিল, রকমারি ক্লিয়ারেন্স সেল, ২০২৫
Related Products
Product Specification & Summary
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) বাংলা সাহিত্য নয় শুধু; বিশ্বসাহিত্যের এক
বিচিত্র বিস্ময়। সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় এমন সফলভাবে বিচরণ করা শিল্পীর সংখ্যা।
সমগ্র বিশ্বসাহিত্যে খুবই কম। রবীন্দ্রনাথ যে একজন দার্শনিক-কবি, সে প্রমাণ বহন
করছে তার শেষ লেখা' কাব্যগ্রন্থ। একজন শিল্পী যে জীবন ও জগতের ব্যাপারে স্রষ্টার
প্রতি বিশ্বাসবােধে, কত মহীয়ান হয়ে ওঠতে পারেন, সেটির প্রমাণহী হলেন।
রবীন্দ্রনাথ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষ লেখা’ কাব্যের ১ সংখ্যক কবিতায় (সম্মুখে শান্তিপারাবার
: ১৯৩৯) তিনি জীবনের অন্তিমে মহা শান্তিপারাবার অনুভব করেছেন। স্রষ্টার উদ্দেশ্যে
কবি লিখেছেন, স্রষ্টা হলেন মুক্তিদাতা। তাঁর দয়া এবং তার ক্ষমা কবির চিরযাত্রার
চিরপাথেয় হবে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। জীবনের কর্ণধার স্রষ্টাকে ক্রোড় পেতে
কবিকে গ্রহণ করার কথা তিনি বলেছেন। মর্ত্যের বন্ধন যখন ক্ষয় হয়ে যাবে, তখন।
বিরাট বিশ্ব যেন কবিকে বাহু মেলে গ্রহণ করে। বিশ্বস্রষ্টার অস্তিত্বময়তার অবিনাশী
শাশ্বতবােধ কবির অন্তরে তখন স্পষ্টমান। অসীমের পথে কবি ধ্রুবতারকার জ্যোতিকে
জ্বলতে দেখেছেন। মহা অজানার নির্ভয় পরিচয় কবি তার অন্তরে লাভ করেছেন। স্রষ্টা
চেতনারূপ অসীম অস্তিত্বের পরিচয়কে কবি ভয়ের মাধ্যমে নয়; নির্ভয়তা, নিশ্চয়তা ও
নিশ্চিন্ত অনুভবের মাধ্যমে কবির অন্তরে লাভ করেছেন। রবীন্দ্রনাথের বিশ্বাস ও অনুভূতি
যে কত সুষ্ঠাগত প্রাণ—তারই স্পষ্ট চেতনার আবাহন এই কবিতায় অভিব্যক্ত হয়েছে।
২ সংখ্যক কবিতায় (রাহুর মতন মৃত্যু : ১৯৪০) কবি ‘পরম আমির সত্যে তাঁর
অস্তিত্বগত অনুভবকে সম্পর্কিত করেছেন। জীবনের মধ্যে মৃত্যু ছায়া ফেললেও জীবনের
স্বর্গীয় অমৃতকে তা গ্রাস করতে পারবে না কখনাে। জীবনে কবির সৃষ্টির যে সম্পদ
সে অক্ষয় জ্ঞানৈশ্বর্য তাে স্বর্গীয় অমৃতের মতাে গুরুত্বপূর্ণ। জড়ের কবলে কবির সৃষ্টি
কখনাে বিলীন হয়ে যাবে না। মানবের প্রতি এবং স্রষ্টার প্রতি কবির যে প্রেম—সেই
প্রেমের মূল্যের অসীমতাকে অস্বীকার করার ও বঞ্চনা করার কোনাে সুযােগ নেই বলে
কবি মন্তব্য করেছেন। কবির সৃষ্ট যে সাহিত্যজগৎ—তার প্রতি কবির গভীরতাধর্মী
অনুধ্যান এখানে ভাষায়িত হয়েছে। কবি সবচেয়ে সত্য করে বর্তমানে যাকে, যে স্রষ্টা
অস্তিত্বকে পেয়েছেন, মিথ্যার মাঝে ছদ্মবেশ ধরে তা এতদিন কবির কাছে ছিলাে। কবি
এটিকে কবির অস্তিত্বের কলঙ্ক হিসেবে অভিহিত করেছেন। কবির স্রষ্টাসন্ধানী বােধ যে
কত গভীর তাই এখানে ভাষারূপ লাভ করেছে। মৃত্যুকে কবি অস্বীকার করে মৃত্যুঞ্জয়ী
চিন্তায় নিজেকে ভাস্বর করে তুলেছেন। বিশ্বের অস্তিত্বসত্তাকে কবি ‘পরম আমি' রূপ স্রষ্টা
অস্তিত্বের সত্যের সঙ্গে একাত্ম করে বিবেচনার মাধ্যমে নিশ্চিত মহাসত্যের পথসন্ধানী
হয়েছেন এই কবিতায় ।।