Category:#10 Best Seller inপশ্চিমবঙ্গের বই: অনুবাদ কবিতা
বইটি বিদেশি সাপ্লাইয়ারের নিকট থেকে সংগ্রহ করতে ৩০-৪০ দিন সময় লাগবে।
দিব্যাভিসার
ভূমিকা
দান্তে তাঁর মহাকবিতার নাম দিয়েছিলেন, ‘কোমেদিয়া’৷ নামপত্রে লেখা ছিল, ‘দান্তে আলিগিয়েরির কোমেদিয়া, যে জন্মসূত্রে ফ্লরেন্সীয়, কিন্তু চরিত্রে নয়।' এই কাব্য এবং তার রচয়িতা-বিষয়ে তা যেমন আমাদের কিছু জানায়, তেমনি কিছু কৌতূহলও জাগায়। কেন তিনি একে ‘কোমেদিয়া’ বলেছিলেন? তাঁর এক প্রধান পৃষ্ঠপোষক কান্ গ্রান্দেকে লেখা একটি চিঠিতে দান্তে জানান, শুরু বিচ্ছেদে এবং শেষ মিলনে বলে এর এমন নামকরণ।
পরবর্তী প্রজন্মে প্রখ্যাত ইতালিয়ান সাহিত্যিক বোক্কাচ্চ তাঁর দান্তের জীবন ও মহাকাব্য-বিষয়ক গ্রন্থটিতে কবির প্রতি যে উচ্ছ্বসিত শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেছিলেন, তা থেকে ক্রমে এই মহাকাব্যের নামের আগে ‘দিভিনা’ বা ‘দিব্য' আখ্যা যুক্ত হল। একালে আমরা একে ‘লা দিভিনা কম্মেদিয়া' নামে চিনি। যদি মনে আনি তাঁর এই মহাকাব্য এক দিব্যদর্শনের যাত্রাপথে পাতাল, পৃথিবী ও উচ্চতম মহাকাশের মধ্যে যোগসূত্র গড়ে, তা হলে এর শুরু-র বিরহ এবং অন্তে মিলনের কথা ভেবে, সমস্তটিকে এক অলৌকিক অভিসারের পালা বা দিব্যাভিসার রূপে ধরতে পারি। অভিসারেও শুরু বিচ্ছেদে এবং অন্ত মিলনে। এ কাব্য উত্তমপুরুষে লেখা। তাই এর অভিসার কবিরই হৃদয়-অভিসার। নবীন বয়সে পৃথিবীতে তাঁর জীবনের প্রথম প্রেমকে অকালমৃত্যু কেড়ে নিয়েছিল। মধ্যজীবনে, রাজনৈতিক, সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক সংকটের মুখে তাঁর আত্মা যখন ক্রমশ এক অনিবার্য অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে, তখনই সেই স্বর্গতা প্রেমের সহায়তায় তাঁর চেতনা সক্ষম হল তমসা ভেদ করে আলোর দিকে ফিরতে। সেই প্রেমেরই প্রেরিত প্রাচীন কবি ভার্জিলের পথ-প্রদর্শনে তা আরোহিত হল নিষ্পাপ পৃথিবীর স্মৃতিতে রচিত ইদেনের কুসুমিত কাননে, তাঁর দয়িতাকে দেখবার প্রেমাভিসারে। সেখান থেকে ওই স্বর্গবাসিনী তাঁকে পথ দেখিয়ে নিয়ে চলেন আরো ঊর্ধ্বে, মহাকাশে ঈশ্বরের দিকে। যা ছিল কবির প্রেমাভিসার, তা-ই পরিণত হল দিব্যাভিসারে।
Report incorrect information