"আমি, আসিমভ" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
এই সুবিশাল বিশ্বের মতােই কল্পনার সীমাহীন বিস্তার... তর্কাতীতভাবে, পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কল্পবিজ্ঞান-কাহিনি লেখক আইজাক আসিমভ আমাদের কালের সর্বোকৃষ্ট মেধা ও মননের অধিকারী। তাঁর সহজবােধ্য লিখন-শৈলী আর বিবিধ বিষয়ে, বিজ্ঞান থেকে শুরু করে, কৌতুকরস, ইতিহাস ইত্যাদিতে তাঁর সুদূরপ্রসারী আগ্রহ, তাঁকে পৃথিবীতে পরিচিতি দিয়েছে, “দ্য গ্রেট এক্সপ্লেইনার” বা “মহান ব্যাখ্যাকার” হিসাবে। “আমি, আসিমভ” তার ব্যক্তিগত কাহিনি স্পষ্ট খােলামেলা এবং সৎ— আসিমভই এইভাবে বলতে পারেন।
এটা একজন স্ববিরােধী প্রতিভার কাহিনি, যিনি বহির্বিশ্বে, নক্ষত্র থেকে নক্ষত্রে ভ্রমণের কথা লিখেছেন, অথচ নিজে এরােপ্লেনে চড়তে চান না, ভয় পান; যিনি বহির্বিশ্বে বিভিন্ন গ্রহে, বিশাল নীহারিকাপুঞ্জে সভ্যতার বিবর্তন ও অগ্রগতির কল্পনা করেছেন, অথচ সবকিছু লিখেছেন নিজের ঘরের চার-দেওয়ালের মধ্যে বসে, ৪৭০টিরও বেশি বইয়ের লেখক, তবু আমাদের শতাব্দীর অন্য অনেক মহান উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্যে এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে নিজের মনন ও সৃষ্টিশীলতাকে ভাগ করে নিয়েছেন। এই বইয়ে আমরা তাঁর সুদূর-বিস্তারী চিন্তাভাবনার এবং তীক্ষ অনুসন্ধানী দৃষ্টির পরিচয় পাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে, ধর্ম থেকে রাজনীতি, প্রেম থেকে বিবাহ-বিচ্ছেদ, বন্ধুত্ব ও হলিউড, যশ-খ্যাতি থেকে নশ্বরতা, ইত্যাদিতে। আবার বিভিন্ন বিখ্যাত লেখকের সম্বন্ধেও তাঁর বিশ্লেষণী অন্তদৃষ্টি আমাদের কৌতূহলী মনকে টেনে রাখে— ক্যাম্পবেল, এলিসন, হেইনলিন, আর্থার সি ক্লার্ক, ডেল রে, সিলভারবার্গ, এবং অন্যান্য যারা আসিমভকে সঙ্গে নিয়ে কল্পবিজ্ঞান-কাহিনির জগৎকে সৃষ্টি করেছেন, সমৃদ্ধ করেছেন।
ব্যক্তি আসিমভের মতােই, তাঁর এই আত্মজীবনী অনন্য, অপ্রতিরােধ্য, তার অতুলনীয় মেধা ও প্রতিভার একটি অকপট স্মৃতিচারণ। বিগত অর্ধ-শতাব্দী ধরে পাঠকদের মনােরঞ্জন করা আসিমভের সমগ্ৰসৃষ্টি ওঁর কল্পনার মানস-চক্ষে উদ্ভাসিত ভবিষ্যতেও একইভাবে সমাদৃত হবে।