কাশ বনের উপর দিয়ে পূবাল বাতাস বয়ে যায়। মরিয়মের বুকের মধ্যে ধ্বক করে ওঠে। দরজায় দাঁড়িয়ে উঁকি দিয়ে আকাশের চাঁদ দেখে। -এমন সুন্দর চাঁদ লাজে মোর চোখ বুঁজে আসে। মাইজা মিয়ায় এখনো বাড়িতে ফিরে নাই। সে যখন ঘরে আসবে...? সারা ঘরে চাঁদের আলো ঝলমল করছে। তারে মুখ দেখাব কেমনে?
মরিয়ম এক ধরনের আবেগে শিহরণে চঞ্চল হয়ে ওঠে। প্রমত্ত পদ্মার শো শো গর্জন ধ্বনি ওকে আবারো চমকে দেয়।
জোরে বাতাস বয়, পদ্মা আরও বেশি প্রমত্ত হয় ওঠে। লাউখলার মানুষ পদ্মার গর্জন শুনতে অভ্যস্থ। মরিয়মের লেপাপুছা ঘরের এক পাশে চৌকিতে বিছানা করে হাবিলা আর কাবিলাকে ঘুম পাড়িয়েছে। -ছেলে দুইটা বড় ত্যান্দর, বাপের আওয়াজ পেলে লাফিয়ে ওঠে। বাপের বশ ছেলে।
মরিয়ম নীলাম্বরী টেনে টুনে সুন্দর করে পরে নেয়। মাথায় ঘোমটা টেনে হাতের দিকে তাকায়। ফর্সা ছিপ-ছিপে গড়নের মরিয়ম হাতে লাল কাঁচের চুড়ির ঝিনঝিনি শব্দ তোলে। নাগো না থাক কাবিলা ত্যান্দর জেগে যাবে।